সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: অবশেষে গ্রেফতার হল দিল্লির ভন্ড বাবা স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু চৈতন্যানন্দ সরস্বতী (Chaitanyanand Saraswati)। শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের আগ্রার একটি হোটেল থেকে তাঁকে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আজ অর্থাৎ রবিবার তাঁকে দিল্লির আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা যাবে, যাতে গোটা কাণ্ডের পর্দাফাঁস হয়।
জমেছে অভিযোগের পাহাড়
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, দিল্লির বসন্তকুঞ্জের শ্রী সারদা ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্টের অন্তত ১৭ জন ছাত্রীকে তিনি যৌন হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীরা সরাসরি বলেছে, পড়াশোনার আড়ালে একাধিকবার তাদেরকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে উল্টোপাল্টা এসএমএস করা হয়েছে, শরীর স্পর্শ করার চেষ্টা করা হয়েছে, পরীক্ষায় কম নম্বরও দেওয়া হয়েছে। সবথেকে বড় ব্যাপার, শ্রীঙ্গেরীর বিখ্যাত শারদা পীঠ এবং তার শিক্ষাঙ্গন SIIMR এর তহবিল থেকেই ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই ভন্ড বাবা। পাশাপাশি ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে একাধিক ট্রাস্ট নির্মাণ করেছে এবং দিল্লির বসন্তপুঞ্জের সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে সেই আয় অন্য খাতে সরিয়ে দিয়েছে। এমনকি দুটি আলাদা পাসপোর্ট, ভুয়ো প্যান কার্ড, লাক্সারি গাড়ির ডকুমেন্টও তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশের।
Delhi Police apprehended Swami Chaitanyananda Saraswati @ Parth Sarthy, late at night, from Agra.
He is accused of allegedly molesting female students pursuing PGDM courses under the EWS scholarship and forgery.
(Pic Source: Delhi Police) pic.twitter.com/m2cpaRsnln
— ANI (@ANI) September 28, 2025
জামিনে বাধা আদালতের
প্রসঙ্গত, পাটিয়ালা হাউস কোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন আগাম খারিজ করে দিয়েছে। বিচারক ডক্টর হারদীপ কৌর স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এত গুরুতর অভিযোগে তদন্ত শুরুর আগেই জামিন দিলে প্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এদিকে চৈতন্যানন্দের আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট অজয় বর্মন দাবি করছেন, একটি ট্রাস্ট তৈরি করা সম্পূর্ণ আইনের আওতায় পড়ে। কোনওরকম সম্পত্তি বিক্রি করা হয়নি। সবকিছু ট্রাস্টের আওতায় রয়েছে। তবে আদালত তাঁর যুক্তি মেনে নেয়নি।
আরও পড়ুনঃ নিমেষের মধ্যেই গুঁড়িয়ে যাবে শত্রুপক্ষের হামলা, তৈরি হচ্ছে ভারতের অন্তশস্ত্র! কী এর বিশেষত্ব?
এদিকে প্রসিকিউশন দাবি করছে, প্রায় ৩০ কোটি টাকা উদ্ধারের জন্য হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জেরা করা দরকার। এমনকি চৈতন্যানন্দ গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়েও বেড়াচ্ছিলেন। তাই একাধিক রাজ্যে তল্লাশি চালাতে হবে। পাশাপাশি যদি তাঁকে মুক্ত রাখা হয়, তাহলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটবে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠছে যে, সে নিজেকে কখনও কখনও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিবারের সদস্য হিসাবে দাবি করতেন। আবার কখনও জাতিসংঘের প্রতিনিধি বলেও পরিচয় দিতেন। এখন সকালের নজর আজকের দিকে। কারণ তাঁকে আজ আদালতে তোলা হবে পুলিশি হেফাজতের জন্য। তদন্তকারীরা মনে করছে, এই মামলা শুধুমাত্র যৌন হেনস্থার জন্য নয়, বরং একাধিক আর্থিক জালিয়াতি আর পরিচয়পত্র নকল করার অভিযোগের সঙ্গেও জড়িত।