সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সামান্য তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এক ভাই আর এক ভাইকে খুন করে ফেলল! উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গোপালনগর (Gopalnagar) থানার কান্দিপুর ১১ নম্বর রেলগেট এলাকায় পিসতুতো ভাইয়ের হাতেই খুন হয়েছে ১৫ বছরের এক কিশোর প্রদীপ। আর এই ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকস্তব্ধ। জানা গিয়েছে, সামান্য বায়ু ত্যাগ করাকে কেন্দ্র করেই এই খুনোখুনি।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
স্থানীয় এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতের বেলা বন্ধুদের সঙ্গে প্রদীপ আড্ডা দিতে গিয়েছিল। রেললাইনের ধারে ৮-১০ জন মিলে বসে গেম খেলছিল তাঁরা। আর গেম খেলতে খেলতে হঠাৎ করে প্রদীপ বায়ু ত্যাগ। এরপরেই তাঁর ছোট ভাই জিজ্ঞাসা করে যে, তুই কেন পাদ দিলি? আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বাগবিতণ্ডা।
প্রথম দিকে ঠাট্টা মশকরা করা হলেও পড়ে সেই ঘটনা ভয়াবহ রূপ নেয়। একসময় বাগবিতণ্ডা হাতাহাতিতে গড়ায়। অন্যরা দূরে সরে যাওয়ার পর প্রদীপ আর সূর্য সেখানে একাই থেকে যায়। আর তখনই সূর্য প্রদীপের বুকে একের পরে ঘুষি মারতে থাকে। ওখানে উপস্থিত এক কিশোর বলছে, সে ৮-৯ টা ঘুষি মেরেছিল। এরপর প্রদীপ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
প্রদীপের মা কাঁদতে কাঁদতে জানায়, ও রাতে ভাত খাচ্ছিল। আমাকে বলল, মা তুমি একা খাচ্ছ, আমাকেও দুটো খাইয়ে দাও। আমি খাইয়ে দিলাম। তারপর ও বলল, মা একটু রেললাইনের দিক থেকে আড্ডা দিয়ে আসি, তুমি টিভি দেখো। আর আমি প্রথমে যেতে দিতে চাইছিলাম না। কিন্তু সে গেল। আর তারপর ফিরে আসলো না।
আরও পড়ুনঃ ষষ্ঠীর দিনই চড়ল সোনার দাম, ৪৫৫০ টাকা বাড়ল রুপোর দরও
প্রসঙ্গত, তাঁর বন্ধুবান্ধবরা বলছে, প্রদীপ এবং সূর্যের মধ্যে আগেও নানান কারণে অশান্তি হতো। কিন্তু এত তুচ্ছ কারণে কেউ নিজের ভাইকে খুন করতে পারে, তা দেখেই হতবাক সবাই। ফেসবুকের ওই পোস্টে কেউ কেউ কমেন্ট করছে, গেমগুলোকেই ব্যান করে দেওয়া হচ্ছে না কেন? চাকরি দেবে না, অন্তত একটা সুস্থ সমাজে তো মানুষকে বাঁচতে দিক। স্কুল থেকে ট্যাব, মোবাইলের টাকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলি বন্ধ করা উচিত। গেম মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।