প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট যুদ্ধ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সারিবদ্ধভাবে তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রকে শক্ত করে তুলেছে। এদিকে সামনেই বিধানসভা নির্বাচনের কারণে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনো ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ যাতে না হয় সেজন্যও কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই নির্দেশকে কার্যত তোয়াক্কা না করেই ফের আরামবাগের (Arambagh) খানাকুলে উঠল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ।
প্রাক্তন ব্লক সভাপতিকে পুনরায় পদ দেওয়ার দাবি!
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ রবিবার, আরামবাগের খানাকুল ব্লক ২ এর যুব তৃণমূল আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ মাইতি এবং খানাকুল ব্লক ২ এর তৃণমূল আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার মহিলা সহ সভাপতি মমতা বণ্টন পদত্যাগ করেন। এর কারণ হিসেবে স্পষ্ট জানানো হয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের লড়াই। আসলে খানাকুল ব্লক ২ এর প্রাক্তন ব্লক সভাপতি রমেন প্রামাণিককে পুনরায় কাজে বহাল রাখার দাবি উঠেছে। শুধু তাই নয় তৃণমূলের যুব সভাপতি পলাশ রায় কীভাবে ৪৬ বছর বয়সে সভাপতি পদ পেল তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এবং দ্রুত পদত্যাগের দাবিও তোলা হয়। হুগলির রাজনৈতিক মহলে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
কী বলছেন পদত্যাগকারী কর্মীরা?
খানাকুল ব্লক ২ এর প্রাক্তন সভাপতি রমেন প্রামাণিক জানিয়েছেন যে, “ জনগণ আমাকে সমর্থন করছে। শুধু তাই নয় দলের একাংশ কর্মী আমাকে সমর্থন করছে, তাই তাঁরা পদত্যাগের মতন এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাবু দা (মৃন্ময় দা) আমার রাজনৈতিক গুরু। তিনি আমাকে ২০০৬ সালে রাজনীতিতে ঢুকিয়েছেন। দলের জন্য আমি অনেক করেছিলাম, করছি, ভবিষ্যৎ এও করব, জনগণ এবং দলের একাংশ আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমি খুবই কৃতজ্ঞ তাঁদের প্রতি। ” এদিকে একই দাবি পদত্যাগকারী তৃণমূল কর্মীদের। তাঁদের দাবি, “ খনকুল এলাকা থেকে বিজেপিকে দমন করতে দরকার এক লড়াকু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের। আর সেই ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য একমাত্র ফুটে উঠেছে রমেন প্রামানিকের মধ্যে। তাই তাঁকেই আমাদের চাই।”
আরও পড়ুন: ‘কয়েক বছর ধরেই হয়রান করছে!’ সোনমের গ্রেফতারিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তাঁর স্ত্রী
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার, সন্ধ্যায় হুগলির গোঘাট থানার কুমারগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের চাকলা গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। যার জেরে আহত হলেন একাধিক ব্যক্তি। অভিযোগ তৃণমূল কর্মী শেখ ইলিয়াসের সঙ্গে বুথ সভাপতি মীর হানিফের দীর্ঘদিন ধরে জমিজায়গা নিয়ে বিবাদ চলছিল। এ দিন ইলিয়াসের বাড়ি নির্মাণকাজ চলার সময় হানিফের অনুগামীরা সেখানে চড়াও হয়। ধারাল অস্ত্র ও বাঁশ নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ইলিয়াস পরিবারের। এদিকে উৎসবের আবহে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই ঘটনায় শাসক দলের একাংশের মধ্যেও তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। পরিস্থিতির জন্য নেতৃত্বকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।