প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চারদিকে শুধুই পুজোর আমেজ, মাইকে মাইকে বাজছে মন্ত্র, কিন্তু এসবের মাঝেও পুজো যেন থমকে গিয়েছে চাকরিহারাদের। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন SSC-র প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। স্থায়ী চাকরি না থাকায়, ভবিষ্যৎ একেবারে অনিশ্চিত সকলের। তবে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন। বেতনও পাবেন। কিন্তু সকলের বেতনের ব্যবস্থা হলেও চুঁচুড়ার কোদালিয়ার সুমন বিশ্বাসের (Suman Biswas) বাড়িতে নেমে এল বিষাদ। মিলল না কোনও বেতন।
সেপ্টেম্বরে বড় বিপদ
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন চুঁচুড়ার কোদালিয়ার শিক্ষক সুমন বিশ্বাস। তাই সেক্ষেত্রে তিনিও শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন এবং বেতনও পাবেন। কিন্তু পুজোর মাসে সব বেতন কেটে নেওয়া হল তাঁর। অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে কোনও বেতনই ঢোকেনি তাঁর অ্যাকাউন্টে। সব বেতন কেটে নেওয়া হয়েছে। সুমন বিশ্বাস নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, ‘আপনারা জানেন গত মাসে অর্থাৎ আগস্ট মাসের বেতন আমার বেতন থেকে প্রায় 14000 টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল।। গোটা বাঙালি যখন দূর্গা পূজার আনন্দে মাতোয়ারা, এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের একমাত্র যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক হিসেবে দুর্গাপূজার মুহূর্তে এ মাসের সম্পূর্ণ বেতন মুখ্যমন্ত্রী কেড়ে নিয়েছেন। আমি আগেই বলেছিলাম রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমাকে মেরে ফেলতে চান এবং আমার পরিবারকে অনাহারে মেরে ফেলতে চান।।।’
বেতন ঢোকেনি পুজোর মাসে
চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাস জানান, “ চলতি মাসে এক টাকাও ঢোকেনি তাঁর অ্যাকাউন্টে। পুরো বেতন কেটে নিয়েছে সরকার। যেখানে গতমাসে তাঁর বেতন থেকে ১৪ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়।” অভিযোগ তুলেছেন, তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে যেন ইচ্ছে করেই অনাহারে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। সুমন বাবুর স্পষ্ট অভিযোগ, “আমাদের যোগ্য চাকরি চুরি করে, দুর্নীতি করে, কেড়ে না নিলে আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা থাকত না।” কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তার লিখিত পরীক্ষাতেও তিনি বসে ছিলেন।
আরও পড়ুন: বীরভূমে তেলের বন্যা! ফ্রি-তে নিতে জমল ভিড়, সামাল দিতে এগিয়ে এল পুলিশ-দমকল
প্রসঙ্গত, নিজের যোগ্যতায় পাওয়া হকের চাকরি ফিরে পেতে এখনও মরিয়া হয়ে লড়াই করে চলেছে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকরা। প্রতিটা পদে পদে তাঁদের মধ্যে চাকরি নিয়ে একটা ভয় কাজ করছে। তবে এই ভয়ের মাঝেও যে তাঁদের আন্দোলনের মনোবল ভাঙছে না তা রীতিমত স্পষ্ট করলেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক সুমন বিশ্বাস। অর্থাৎ শত বাধা থাকলেও তিনি যে এই আন্দোলন থেকে সরে আসছেন না, সেকথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।