প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আজ মহাষ্টমী। সকাল সকাল শুরু হয়েছে অষ্টমীর পুজো। পঞ্জিকা ও তিথি অনুযায়ী শুরু হয়েছে অঞ্জলির সময়। কিন্তু এই পুজোর আবহে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ফরাক্কায় দেখা গেল এক অবাক করা ঘটনা। এক দুর্গাপুজো মণ্ডপে সেঁটে দেওয়া হয়েছে আজানের সময়সূচি। আর তাতেই এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। অভিযোগের আঙুল শাসকদলের দিকে উঠতেই, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যুক্তি দিচ্ছে নেতারা।
পুজো মণ্ডপে আজানের সময়সূচী!
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় মহেশপুর পঞ্চায়েতের পূর্ব শিবতলায় এক পুজো মণ্ডপে দীর্ঘদিন ধরে পুজো হয়ে আসছে। সেখানকার স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সবাই মিলে জোটবদ্ধ হয়ে এই পুজো করে থাকে। তবে চলতি বছর ঘটল আরেক ঘটনা। দুর্গাপুজোর মহাঅষ্টমীতে যখন দেবী দুর্গার পুজোর প্রস্তুতি চলছিল, সেই সময় মণ্ডপের প্রধান দরজায় একটি বড় পোস্টারে আজানের সময়সূচি লাগানো হয়। সূচিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব এবং ইশার সময়। জানিয়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সম্প্রীতির সাফাই তৃণমূলের
পুজো মণ্ডপে এইভাবে আযানের সময়সূচি তুলে ধরায় শাসকদলের একাংশ এটিকে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে ‘সমঝোতা’র অংশ হিসেবে মনে করছে। তাদের মতে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। কিন্তু এই ‘সমঝোতা’ আবার হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত অপমানজনক হিসেবে ঠেকেছে। এদিকে শাসকদলের এই কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছে এই ঘটনায় সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি তারা বলেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সম্পূর্ণ ভাওতাবাজি। আসলে এখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘু তাই এই আজানের সময়সূচি যদি বাধ্যতামূলক ভাবে না লাগানো হয় তবে পুজো মণ্ডপ ভাঙচুর করা হতে পারে। যদিও এই একই কথা শোনা যায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও।
আরও পড়ুন: বীরভূমে তেলের বন্যা! ফ্রি-তে নিতে জমল ভিড়, সামাল দিতে এগিয়ে এল পুলিশ-দমকল
কী বলছেন শুভেন্দু অধিকারী?
ফারাক্কার পুজো মণ্ডপে আজানের সময়সুচি দেখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মুর্শিদাবাদে মহম্মদ ইউনূস মডেল, এই সরকারের মূল উদ্দেশ্য হল ক্ষমতায় টিকে থাকা ও হিন্দুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি করে মুসলিম ভোট বাড়িয়ে নিজেদের জায়গা পরিপক্ত করা, কারণ সনাতনীদের আস্থা এই সরকারের ওপর থেকে উঠে গেছে। তাই হিন্দুদের বেকায়দায় ফেলে ভোট ব্যাঙ্ককে মজিয়ে রাখতেই এই কার্যকলাপ।” প্রসঙ্গত, অনেকেই এই ঘটনাকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হওয়া অত্যাচারের সঙ্গে তুলনা করেছে। তাঁদের মতে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় যা হচ্ছে, তা বাংলাদেশের মতো সংখ্যালঘুদের উপর নানা নিয়ম আরোপের মত।
“Muhammad Yunus Model” in Murshidabad !!!
Mamata Banerjee’s Appeasement Politics Have Forced Hindus to Compromise in Farakka.West Bengal have been witnessing an unprecedented assault on Hindu faith and culture under the Mamata Banerjee’s Misrule.
In Farakka, Murshidabad… pic.twitter.com/RdV9tPGiSG— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) September 30, 2025
শুভেন্দু অধিকারী আরও লেখেন, ‘ফরাক্কার মহেশপুর পঞ্চায়েত এলাকার পূর্ব শিবতলায় দুর্গা পুজোর মণ্ডপে আজানের সময় সূচি প্রদর্শন করা হয়েছে। এই দৃশ্য ব্রিটিশ আমলেও দেখা যায় নি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে এই দৃশ্য দেখতেও আমরা বাধ্য হলাম।’