কাজ সহ ২০ লক্ষ কর্মীর বেতন বন্ধ! শাটডাউনে কী কী প্রভাব পড়বে আমেরিকায়?

Published:

Shutdown In America how it will impact
Follow

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গত মঙ্গলবার, আমেরিকার প্রশাসন তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে না পারায় এবার দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়ে গেল শাটডাউন (Shutdown In America)। যার জেরে, অচল হয়ে পড়ল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনও। জানা গিয়েছে, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য শেষ মুহূর্তে বৈঠকে বসেছিলেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা। তবে তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে একমত হতে না পারায়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত 12টা নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে শাটডাউন ঘোষণা করে দেয় হোয়াইট হাউস।

আমেরিকায় শাটডাউনে কী কী বন্ধ হয়েছে?

প্রথমেই বলি, প্রত্যেক আর্থিক বছরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কাজ চালানোর জন্য মার্কিন কংগ্রেসকে অর্থ বরাদ্দ করতে হয়। অর্থবর্ষ শুরু হয় মূলত 1 অক্টোবর থেকে। তবে এই সময়ের মধ্যে যদি সেনেট সদস্যরা একমত হয়ে ব্যয় বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর যতদিন না পর্যন্ত কংগ্রেস থেকে আর্থিক বরাদ্দ করা না হচ্ছে, ততদিন সরকারি দপ্তরগুলি বন্ধ থাকবে। বলা বাহুল্য, 100 সদস্যের মার্কিন সেনেটে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য রয়েছেন 53 জন। তবে সরকারি তহবিল সংক্রান্ত বিল পাস করার ক্ষেত্রে অন্তত 7 জন ডেমোক্র্যাট সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন, কিন্তু সেটা না হওয়ায় বিল পাস করানো যায়নি। যারা জেরে আমেরিকা জুড়ে শুরু হয়েছে শাটডাউন।

এবার আসা যাক এই শাটডাউনের কারণে কোন কোন পরিষেবা বন্ধ থাকবে সে বিষয়ে। জানিয়ে দিই, আমেরিকায় শাটডাউনের কারণে মার্কিন সরকারের বেশিরভাগ দপ্তরের কাজ বন্ধ থাকবে। যদিও আপাৎকালীন পরিষেবাগুলি চালু রাখা হবে বলেই জানা যাচ্ছে। BBC এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারের অধিকাংশ দপ্তর বন্ধ থাকলেও বেশ কিছু জরুরী দপ্তরে কাজ চলবে। জানা গিয়েছে, যেসব কর্মীরা শাটডাউন চলাকালীন কাজ করবেন তাদের অধিকাংশই বেতন পাবেন না। শাটডাউন শেষ হলে তবেই বেতন দেওয়ার কাজ শুরু হবে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, শাটডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে আমেরিকার খাদ্য দপ্তরে। এছাড়াও শিক্ষা সহ বেশ কিছু দপ্তরের কাজ পিছিয়ে যেতে চলেছে। জানা গিয়েছে, এক শাটডাউনের কারণে বিভিন্ন দপ্তর মিলিয়ে অন্তত 20 লক্ষ কর্মী বেতন পাবেন না। তাদের মধ্যে অনেককেই জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। রিপোর্ট বলছে, অভিবাসন, সিক্রেট সার্ভিস, নাগরিকত্ব ও অভিবাসন এবং পরিবহন নিরাপত্তা পরিষেবার কাজ শাটডাউনের মধ্যেও চালু থাকবে। এছাড়াও আমেরিকার প্রতিরক্ষা দপ্তরের বেশ কিছু ক্ষেত্রে কাজ চলবে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ সীমান্ত, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রভৃতি। এছাড়াও এয়ারলাইন্সগুলি সতর্ক করে জানিয়েছে, এই শাটডাউনের প্রভাব সরাসরি ফ্লাইটে পড়তে চলেছে।

আপাতত বন্ধ হচ্ছে বিভিন্ন সুরক্ষা ভাতা

হোয়াইট হাউসের শাটডাউন ঘোষনার পরই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই সময়ে একাধিক সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে বয়স্ক নাগরিক, প্রতিবন্ধী ও অন্যান্য নাগরিকদের জন্য আমেরিকার সরকারের তরফে যে সামাজিক সুরক্ষা ভাতা দেওয়া হয়, সেটাও আপাতত বন্ধ থাকবে। এছাড়াও আমেরিকার শ্রম বিভাগের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, নতুন তহবিল সংক্রান্ত বিল পাস না হওয়া পর্যন্ত আমেরিকার বেকারদেরও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে। সেই সাথে বিনা বেতনে কর্মীদের কাজের বিষয়টা তো রয়েছেই।

অবশ্যই পড়ুন: ‘ভূত’-এর ভয়ে অজ্ঞান একের পর এক দর্শনার্থী, বর্ধমানে বন্ধ পুজো মণ্ডপ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি

2018 সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো আমেরিকার মসনদে বসার পর 35 দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল মার্কিন প্রশাসন। আজ পর্যন্ত এটাই আমেরিকার সবচেয়ে বড় শাটডাউন। তবে এবারে তহবিল সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি না আসার কারণে যে শাটডাউন নেমে এসেছে সেটা কতদিন স্থায়ী থাকবে তার কোনও উত্তর নেই। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়ে রেখেছেন। তাঁর বক্তব্য, আইন প্রণেতারা যদি তহবিল সংক্রান্ত আইন বা বিল পাস না করেন তবে আমরা খুব শীঘ্রই আরও ফেডারেল কর্মী বরখাস্ত করব। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশ্যে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join