সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। প্রতিরক্ষা খাতে একাধিকবার ভারতকে সহায়তা করেছে রাশিয়া। তবে এবার সেই সম্পর্কেই নয়া মোড়। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রধান যুদ্ধবিমান JF-17 Thunder Block III এর জন্য এবার রাশিয়া অত্যাধুনিক RD-93MA ইঞ্জিন (Russia Pakistan Relations) সরবরাহ করতে চলেছে, যা ভারতের জন্য হতে চলেছে মাথা ব্যাথার কারণ।
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানে রাশিয়ার শক্তি
প্রসঙ্গত, JF-17 Thunder Block III পাকিস্তানের নিজস্ব কোনও যুদ্ধবিমান নয়, বরং এটি চিনের সঙ্গে যৌথভাবেই তৈরি। তবে এর প্রাণশক্তি রাশিয়ার হাতেই। ইউনাইটেড ইঞ্জিন কর্পোরেশন ক্লিমভ সংস্থার তরফ থেকেই এই ইঞ্জিন বানানো হয়। আর এটি মূলত পাকিস্তানের বিমান বাহিনীকে আরও জোরদার করেছে। প্রথম দিকে ব্লক 1 এবং ব্লক 2 সংস্করণগুলিকে মাঝারি মানের ফাইটার জেট বলা হত। তবে ব্লক 3 একেবারে অন্য রূপে এবার হাজির হয়েছে। রাডার, হেলমেট সহ উন্নত ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম দিয়ে তৈরি এই ফাইটার জেট। এর সঙ্গে রয়েছবে চিনের PL-15 দীর্ঘ পাল্লার মিসাইল। ফলে পাকিস্তানের এয়ার ফোর্স যে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এই উন্নতির কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছে রাশিয়ার নতুন RD-93MA ইঞ্জিন।
আপত্তি ভারতের
প্রসঙ্গত, ভারত বহুদিন ধরেই রাশিয়াকে অনুরোধ করে আসছে, যাতে পাকিস্তানের হাতে এরকম কোনও অস্ত্র না তুলে দেওয়া হয়। 2006 সালেও নয়াদিল্লি আপত্তি জানিয়েছিল, যখন রাশিয়া চিনের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে JF-17-এ ইঞ্জিন দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। আর তখন রাশিয়া যুক্তি দিয়েছিল যে, আমরা সরাসরি পাকিস্তানকে দিচ্ছি না, বরং চিনকেই এই ইঞ্জিন দিচ্ছি। তবে এবার মস্কো সেই আড়ালেই সরাসরি পাকিস্তানকে ফাইটার জেটের ইঞ্জিন তুলে দিচ্ছে। এমনকি ভারতের আপত্তি কার্যত উপেক্ষা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ একাদশীতে স্থগিত ভারত বনধ! জানিয়ে দিল মুসলিম পার্সনাল ল বোর্ড
ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়ার সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, RD-93MA ইঞ্জিনকে শুধুমাত্র শক্তিশালী বললেও কব হবে। বরং এটি আগের তুলনায় আরও বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী আর দীর্ঘস্থায়ী। ফলত JF-17 Thunder Block III শুধুমাত্র ভারী অস্ত্র বহন করতে পারবে এমনটা নয়, শত্রুপক্ষের হামলাকেও সেকেন্ডের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেবে। আর সঙ্গে যদি এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম যুক্ত হয়, তাহলে পাকিস্তানের কাছে তা হয়ে উঠবে পুরো গেম চেঞ্জার আর ভারতীয় বায়ু সেনার পক্ষে হুমকির কারণ। এবার রাশিয়ার ইচ্ছাকৃতভাবেই ভারতের উপর চাপ বাড়াতে চাইছে কিনা, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। সব প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে।