সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: মাত্র ৩১ বছর বয়সেই তিনি ২১,১৯০ কোটি টাকার মালিক। শুনতে অবাক লাগলেও এক্কেবারে সত্যি ঘটনা। ভারতের সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নেয়ার হয়ে ইতিহাস গড়ে ফেললেন চেন্নাইয়ের তরুণ অরবিন্দ শ্রীনিবাস (Aravind Srinivas)। প্রযুক্তির ঝলমলতে গড়ে তোলা তাঁর এআই স্টার্টআপ Perplexity তাঁকে বিশ্বের ধনকুবেরদের কাতারে পৌঁছে দিয়েছে। তবে কীভাবে আসল তাঁর এই বিরাট সফলতা? সবটা জানাবো আজকের এই প্রতিবেদনে।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালে প্রকাশিত ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নাম উঠেছে অরবিন্দ শ্রীনিবাসের। তিনিই নাকি দেশের সবথেকে কম বয়সী বিলিয়নেয়ার। পারপ্লেক্সিটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। আর তার পিছনে হাত রয়েছে এই অরবিন্দ শ্রীনিবাসের। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এই প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ কোটির গণ্ডি পেরিয়েছে। এমনকি এই এআই চালিত সার্চ ইঞ্জিন এখন গুগলের মতো প্রতিষ্ঠিত সংস্থারও প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কে এই অরবিন্দ শ্রীনিবাস?
১৯৯৪ সালের ৭ জুন অরবিন্দ চেন্নাইতে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা শুরু সেখানকার স্থানীয় স্কুলেই। পরে আইআইটি মাদ্রাজ থেকে বি.টেক এবং এম.টেক সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। এরপর সেখানেই তাঁর প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ জন্মায়। তারপর ২০২১ সালে তিনি বিদেশে পাড়ি দেন। ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি অর্জন করেছিলেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল কম্পিউটার ভিশন, রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং, ট্রান্সফরমার-ভিত্তিক মডেল।
তবে শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি বিশ্বের নামিদামি সংস্থাগুলিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন অরবিন্দ শ্রীনিবাস। প্রথমত তিনি ওপেনএআই এর গবেষণা ইন্টার্ন হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এরপর ডিপমাইন্ডে কনট্রাস্টিভ লার্নিং নিয়ে কাজ করেন। তারপর গুগলে যোগ দিয়ে হ্যালোনেট ও রেসনেট-আরএস মডেলের গবেষণাতেও অবদান রাখেন তিনি। আর এই অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয়।
সূচনা হয় পারপ্লেক্সিটির
এদিকে ২০২২ সালে ডেনিস ইয়ারাটস, জনি হো এবং অ্যান্ডি কনউইনস্কির সঙ্গে মিলে অরবিন্দ তৈরি করে ফেলেন পারপ্লেক্সিটি। এআই। প্রসঙ্গত, সেই সময় তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল চ্যাটজিপিটি। আর ঠিক তখনই অরবিন্দর প্ল্যাটফর্ম পারপ্লেক্সিলিটি আত্মপ্রকাশ করে। প্রসঙ্গত, গতি, সঠিক উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা আর সহজ ব্যবহারের জন্য পারপ্লেক্সিটি খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। এমনকি এই সংস্থায় জেফ বেজোসও বিনিয়োগ করেন। পাশাপাশি অ্যাপল এবং মেটার তরফ থেকে কোম্পানি বিক্রির প্রস্তাবও এসেছিল। তবে অরবিন্দ জানিয়ে দেন, পারপ্লেক্সিটি স্বাধীনভাবেই এগোবে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ট্রিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে ইলন মাস্ক
তবে শুধুমাত্র উদ্যোক্তা হিসেবেই থেমে থাকেননি অরবিন্দ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অরবিন্দ বিনিয়োগকারী হিসেবেও নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। তিনি ইলেভেনল্যাবস এবং সুনো নামের দুটি সংস্থাতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করেছেন। এমনকি তিনি নিজেই বলেছেন, তাঁর প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীদের বড় অংশ ছিল ভারতীয়। তাই ভবিষ্যতে বেঙ্গালুরু বা হায়দ্রাবাদে ইঞ্জিনিয়ারিং টিম গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তিনি।