সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত Flipkart, Amazon, Meesho, ইত্যাদি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মকেই প্রাধান্য দিই। তবে এবার সামনে এল বিরাট খবর। জানা যাচ্ছে, এবার সরকারের র্যাডারে এসেছে ফ্লিপকার্ট সহ দেশের একাধিক ই-কমার্স সংস্থাগুলি। ক্যাশ অন ডেলিভারি অপশন বেছে নেওয়া গ্রাহকদের কাছ থেকে নাকি অতিরিক্ত টাকা (CoD Charges) নেওয়া হয়েছে। তা নিয়েই কেন্দ্রীয় ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক বড়সড় মন্তব্য করেছে।
গ্রাহকদের অভিযোগে এবার নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র
গ্রাহকের কাছ থেকে পাওয়া একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বহু ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ক্রেতাদের কাছ থেকে পণ্যের দামের সাথে অতিরিক্ত অনেক টাকা ডেলিভারি চার্জ নিয়ে নিচ্ছে। তারা মনে করছে, এটি একটি ডার্ক প্যাটার্ন, অর্থাৎ এমন একটি কৌশল, যার মাধ্যমে ক্রেতাদের ভুল পথে চালিত করা হচ্ছে এবং অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এক্সে একটি পোস্ট করে জানিয়েছেন, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিতে ক্যাশ অন ডেলিভারির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া বিভ্রান্তিকর প্রক্রিয়া। আর এটি গ্রাহকদের প্রতারণার মুখোমুখি ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি এই ধরনের ডার্ক প্যাটার্ন বন্ধ করতে হবে।
The Department of Consumer Affairs has received complaints against e-commerce platforms charging extra for Cash-on-Delivery, a practice classified as a dark pattern that misleads and exploits consumers.
A detailed investigation has been initiated and steps are being taken to… https://t.co/gEf5WClXJX
— Pralhad Joshi (@JoshiPralhad) October 3, 2025
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেলে এক ব্যবহারকারী ফ্লিপকার্টের বিলিং পেপারের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছিলেন। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে, পণ্যের দাম ছাড়াও অফার হ্যান্ডেলিং ফি, পেমেন্ট হ্যান্ডেলিং ফি এবং প্রটেক্ট প্রমিস ফি যুক্ত রয়েছে। আর সেখানে প্রশ্ন তোলা হয় যে, ডিসকাউন্ট দেওয়ার জন্য কেন ফি, আর পেমেন্ট নেওয়ার জন্য তাহলে কেন পেমেন্ট হ্যান্ডেলিং ফি? এই বিষয়টি সামনে আসতেই কেন্দ্রীয় ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক তৎপর হয়।
কেন্দ্র সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বর্তমানে ফ্লিপকার্টসহ একাধিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। আর সংস্থাগুলো ঠিক কোন যুক্তি দিয়ে ক্যাশ অন ডেলিভারি চার্জ নিচ্ছে, তাও ভোক্তা আধিকারিকরা খতিয়ে দেখছে। এমনকি মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি জানিয়েছেন, যদি কোনও সংস্থা গ্রাহকদের ঠকাতে ডার্ক প্যাটার্ন ব্যবহার করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ রবিবার পুজো কার্নিভালের জন্য অতিরিক্ত মেট্রো ঘোষণা, দেখুন টাইমটেবিল
গ্রাহকদের জন্য স্পষ্ট বার্তা সরকারের
এদিকে সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ডিজিটাল লেনদেনের সময় কোনও অবস্থাতেই যেন গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি চার্জ না নেওয়া হয়। ক্যাশ অন ডেলিভারির জন্য আলাদা কোনও হ্যান্ডেলিং ফি নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। এমনকি তিনি জানিয়েছেন, ই-কমার্স সংস্থাগুলির এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করার জন্য সরকারকেই কঠোর হতে হবে। গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য আর আমরা সেদিকেই সবসময় নজর দেব।