৩৮টি দাবির মধ্যে ২১টি মানল পাকিস্তান! শেষ হল PoK-র রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

Published:

PoK Reconciliation
Follow

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধের আগুনে জ্বলছিল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর। সেখানকার সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া, সরকারবিরোধী ক্ষোভ আর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে একের পর এক নিরীহ মানুষের প্রাণ যাচ্ছিল। অবশেষে আজ সেই বিক্ষোভের ইতি টানল পাকিস্তান সরকার (PoK Reconciliation)। প্রতিবাদীদের 38টি দাবির মধ্যে মোট 21টি দাবিই মেনে নিয়েছে সরকার। আর তাতেই সরকারের সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠেছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। তবে আগামী তিনদিন ধরে নিহত বিক্ষোভকারীদের শোক দিবস পালন করা হবে।

নিহতদের পরিবারকে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী যে সমস্ত নিরাপত্তা কর্মী বা আধিকারিক বিক্ষোভ চলাকালীন প্রাণ হারিয়েছে, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এমনকি প্রতিটি পরিবার থেকে একজন সদস্যকে 20 দিনের মধ্যে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর আহতদের প্রত্যেককে 10 লক্ষ টাকা করে অর্থ সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছে পাক প্রশাসন।

শুধু তাই নয়। জানাানো হয়েছে, যে সমস্ত নিরাপত্তা কর্মী কিংবা আধিকারিক বিক্ষোভ চলাকালীন হিংসা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে এবার সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় মামলা দায়ের করা হবে। এমনকি ঘটনার প্রকৃত সত্য জানতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হবে।

শিক্ষা এবং উন্নয়নেও এবার নতুন দিগন্ত

তবে এই চুক্তির আওতায় সবথেকে বড় প্রভাব পড়ছে শিক্ষাক্ষেত্রে। জানা যাচ্ছে, PoK-তে এবার নতুন দুটি শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হবে। আর তার মধ্যে একটি ইন্টারমিডিয়েট বোর্ড এবং অন্যটি হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন বোর্ড। আগামী 30 দিনের মধ্যেই সমস্ত পুরনো বোর্ড পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে একজোট হবে। আর ছাত্র-ছাত্রীদের মেধার ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হবে। শুধু তাই নয়, মঙ্গল ড্যাম প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আগামী 30 দিনের মধ্যে মিরপুর জেলায় জমিও বরাদ্দ করে দেওয়া হবে। আর সম্পত্তি হস্তান্তরের কর পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মধ্যে সমান করে ভাগ করে দেওয়া হবে আগামী তিন মাসের মধ্যেই।

পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নেও সরকার জোর দিচ্ছে। কারণ জানা গিয়েছে, পাকিস্তান সরকার আগামী 15 দিনের মধ্যেই হেলথ কার্ড প্রকল্পের জন্য তহবিলে ছাড় দেবে। আর প্রত্যেকটি জেলায় সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই মেশিনও স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সরকারের মন্ত্রী এবং উপদেষ্টার সংখ্যাও 20 জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এদিকে সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সাহায্যে দু’টি নতুন সুরঙ্গ তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি গুলপুর ও রহিমান এলাকায় নতুন দু’টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এমনকি সমস্ত থানা হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার এবং নার্সিং সুবিধা আবারও পুনরায় চালু করা হবে।

জল পরিবহন এবং বাসস্থান সংস্কারেও গুরুত্ব

পাক সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, 10টি জেলায় নতুন করে জল সরবরাহ প্রকল্পের সমীক্ষা শুরু হবে চলতে অর্থবর্ষেই। আর কাশ্মীর কলোনিতে নতুন জল প্রকল্প এবং ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হবে। এদিকে সেখানকার মেন্ডার কলোনির শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী মালিকানার অধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি 1300 সিসি গাড়ির পরিবহন নীতি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আবারও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ বাইক ১০০ কেজি, চারচাকা কেন ৩০০০ কেজির হয়? প্রশ্ন রাহুল গান্ধীর! মজা নিল বিজেপি

রাজনৈতিক সংস্কারেও গুরুত্ব

চুক্তি মারফৎ জানা গিয়েছে, পাক গভর্মেন্ট অ্যাক্ট আগামী 90 দিনের মধ্যেই সংশোধন করা হবে। আর সেটি 1990 সালের স্থানীয় প্রশাসন আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবেই তৈরি করা হবে। এদিকে ভারত থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত 12টি বিধানসভা আসনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেও একটি 6 সদস্যের কমিটি গঠন করা হতে পারে। আর এতে পাকিস্তান সরকার, PoK সরকার এবং আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির দু’জন করে সদস্য থাকবে। পরিশেষে, 2 এবং 3 অক্টোবর ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে গ্রেফতার হওয়া সমস্ত PoK বিক্ষোভকারীদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে পাক প্রশাসন।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join