প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত এক বছর ধরে উত্তাল হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বেশ কয়েক জায়গায় এখনও তীব্র ভারত-বিরোধিতা রয়েছে। পাশাপাশি তাল মিলিয়ে সমানভাবে চলছে হিন্দুদের উপর নির্যাতন। খুন, ধর্ষণ, লুটপাট থেকে শুরু করে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর সবই চলছে লাগাতার। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের চাপে বহু পুজো বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। মৌলবাদীদের তাণ্ডবে একের পর এক মণ্ডপ ভাঙার পাশাপাশি হিন্দুদের বাড়িতে হামলা এবং প্রাণহানির মত ঘটনাও ঘটে। আর এবার সেই বাংলাদেশ নিয়ে সুনাম করলেন তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)।
বাংলাদেশের গুণগান হুমায়ুন কবীরের
কয়েক মাস আগেই দুর্গাপুজোর সময় বাংলাদেশে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সংবাদমাধ্যমে খোলাখুলি জানিয়ে ছিলেন যে, বাংলাদেশে তাঁর অনেক আত্মীয়-পরিজন আছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। তবে সেক্ষেত্রে ভিসা পেলে যাবেন, নইলে নয়। অবশেষে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল। টানা চারদিন ছিলেন বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী চৌধুরীপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পৈতৃক বাড়ি। পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাংলাদেশ ভ্রমণের তালিকায় ছিল ঢাকার অভিজাত এলাকা ধানমন্ডি। সেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি দেখে এসেছেন। যেটি বর্তমানে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। এমনকি পদ্মা নদীতে নৌকায় করে ঘুরেছেন। সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ করেছিলেন বাংলাদেশ ভ্রমণ।
বাংলাদেশে গিয়ে কী বললেন হুমায়ুন?
এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন যে, ‘২৮ সেপ্টেম্বর এখানে এসেছি। এই ক’দিন যত জায়গায় গিয়েছি, সর্বত্র হিন্দুদের সঙ্গে কথা বলেছি। এমনকি পুজো কমিটির লোকজনের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নিপীড়িন, নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। উল্টে হিন্দুরা বাংলাদেশে ভালই আছে।’ এদিকে শুক্রবার জেনিভায় রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস অ্যান্ড রিসক অ্যানালিসিস গ্রুপের পরিচালক সুহাস চাকমা এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৪৯টি পুজো মণ্ডপে এবার হামলা হয়েছে। যদিও সেই নিয়ে এখনও ইউনূস সরকার কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
আরও পড়ুন: বিসর্জন ঘিরে উত্তপ্ত জামালপুর, পুলিশসহ সিভিককে ব্যাপক মারধর স্থানীয়দের!
প্রসঙ্গত, হুমায়ুন কবীর সাম্প্রতিককালে বারংবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। তবে সেই রাগ কখনোই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল না, এই রাগ ছিল দলের বাকি নেতৃত্তদের উপর। দল তাঁকে দু’বার শোকজ করলেও তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি তাঁকে। এমনকি তৃণমূলের বাকি নেতৃত্বদের চ্যালেঞ্জ করে আলাদা দল তৈরির হুমকিও দিয়েছিলেন কয়েক মাস আগে। এবার দেখার পালা ২৬ এর নির্বাচনের আগে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।