বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খানাখন্দে ভরা রাস্তাগুলির কারণে বেজায় ভোগান্তি পোহাতে হয় নিত্য যাত্রীদের। এ জন্য অবশ্য স্থানীয় সরকারকে দোষারোপ করতেও ছাড়েন না তাঁরা। সেই পরিস্থিতিতে ঝাঁ চকচকে রাস্তা সাধারণ মানুষের কাছে যেন স্বপ্নের মতোই। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, ভারতেই 50 বছরের পুরনো এমন এক রাস্তা রয়েছে যেখানে আজ পর্যন্ত একটি গর্তেরও দেখা মেলেনি। হ্যাঁ, খানাখন্দ মুক্ত (India Pothole Free Road) ঝাঁ চকচকে সেই রাস্তাটি রয়েছে মহারাষ্ট্রেই।
50 বছরের পুরনো ঝাঁ চকচকে রাস্তা
রাজ্য তথা দেশের অন্যান্য প্রান্তে সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তা তৈরির সময় অর্থ নয় ছয়ের অভিযোগ নতুন নয়। দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের তরফে এমন অভিযোগ পেতে পেতে একটা সময়ে গোটা বিষয়টাই যেন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে! সেই পরিস্থিতিতে, দীর্ঘ 50 বছর ধরে একেবারে খানাখন্দমুক্ত মহারাষ্ট্রের পুনের জংলি মহারাজ রোড বা জেএম রোড।
জানা যায়, 5 দশকেরও বেশি সময় ধরে একেবারে নতুনের মতোই রয়েছে ওই রাস্তাটি। দেখতে একেবারে ঝাঁ চকচকে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও পুনের ওই বহু পুরনো রাস্তাটির বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে অনেকেরই দাবি, ‘এতো পুরনো হওয়া সত্বেও একেবারে নতুনের মতো এই রাস্তা দেশের মানচিত্রে বিরল।’ রাস্তাটি এতটাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন যে তাতে কার্যত নিজের মুখও দেখতে পারবেন বলেই দাবি করছেন নেট নাগরিকরা।
পুনের জংলি মহারাজ রোড সম্পর্কে কিছু অজানা কথা
সোশ্যাল মিডিয়াতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুনের জংলি মহারাজ রোডটি 1976 সালে তৈরি করা হয়েছিল। জানা যায়, 2.5 কিলোমিটারের ওই রাস্তাটি তৈরি করেছিলেন মুম্বইয়ের দুই পার্সি ভাই। হ্যাঁ, তাঁদের সংস্থা রেকন্ডো একেবারে নিজস্ব উদ্যোগে পুনের এই 5 দশক পুরনো রাস্তাটির টেন্ডার পেয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মুম্বই ভিত্তিক ওই সংস্থাটি হট মিক্স সড়ক নির্মাণ কৌশল ব্যবহার করে পুনেতে 2.5 কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জেএম রোডটি তৈরি করেছিল।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই রাস্তাটি তৈরি করতে রেকন্ডো 15 লক্ষ টাকার টেন্ডার পেয়েছিল। জানা যায়, রাস্তাটি সম্পূর্ণ নির্মাণের পর মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনকে একটি লিখিত ওয়ারেন্টি পত্র দিয়েছিল নির্মাণকারী সংস্থাটি। সেই থেকে দীর্ঘ 50 বছর পেরিয়ে এসেও নতুনের মতো রয়েছে পুনের জংলি মহারাজ রোড।
View this post on Instagram
অবশ্যই পড়ুন: পাকিস্তানে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতিদের গুলিতে ঝাঁঝরা ISIS K-র কুখ্যাত কমান্ডার
উল্লেখ্য, ভারতের 50 বছর বয়সী ঝাঁ চকচকে রাস্তাটি নির্মাণের পর রেকন্ডো লিখিতভাবে যে ওয়ারেন্টি পত্র দিয়েছিল তাতে ওয়ারেন্টির মেয়াদ 10 বছর ছিল। অর্থাৎ রাস্তাটির বয়স এক দশক হয়ে যাওয়ার পরই সেটি মেরামত করতে হতো। তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, 10 বছর বা 20 বছর নয়, দীর্ঘ 50 বছর পরও আজ পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামতির প্রয়োজন পড়েনি। তবে দুঃখের বিষয়, ভারতের এমন টেকসই রাস্তা বানানোর পরও পুনে পৌর কর্পোরেশনের তরফে আর কোনও রাস্তা তৈরি কাজ পায়নি ওই সংস্থা।