বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: উৎসবের মরসুমে বাড়ি ফিরেছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। দীপাবলি (Diwali 2025) এবং ছট পুজো উপলক্ষ্যে ছুটি নিয়ে ভিন রাজ্য থেকে এখনও বাড়িতে ফিরছেন অনেকেই। ফলে, ট্রেনের চালু ডাব্বায় পা রাখা দায়। দূরপাল্লার ট্রেনগুলির জেনারেল কামরায় যাত্রীদের ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। এবার এল প্রাণহানির খবর।
জানা যাচ্ছে, গত শনিবার দীপাবলীর ছুটিতে বাড়িতে ফিরছিলেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। চেপেছিলেন ভাদোদরা-গোরক্ষপুর স্পেশাল ট্রেনের জেনারেল কোচে। ট্রেন কানপুর সেন্ট্রাল স্টেশনে ঢুকতেই প্রবল ভিড়ের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাঁর (Man Died In Train)। এরপরই ট্রেনের মধ্যেই মারা যান ওই শ্রমিক। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে উত্তরপ্রদেশের কানপুর সেন্ট্রাল স্টেশনে।
কীভাবে মৃত্যু হল ওই শ্রমিকের?
নবভারত টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রেনের মধ্যে শ্বাসরোধের কারণে মৃত্যু হওয়া ওই শ্রমিকের নাম জ্ঞানেন্দ্র কুমার গন্ড। তিনি কুশিনগর পদ্রানুর রবীন্দ্র নগর ধর্মপুরের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, বছর 34 এর ওই ব্যক্তি গুজরাটের ভাদোদরার একটি নির্মাণ সংস্থায় স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর পরিবারে স্ত্রী, 8 মাসের একটি শিশু রয়েছে।
মৃত জ্ঞানেন্দ্রর পরিবার সূত্রে খবর, দু’বছর আগেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর। ভাই জৈনেন্দ্র এবং পীযূষ জানান, ‘দীপাবলীর ছুটিতে বাড়ি ফেরার জন্য গত শনিবার সন্ধ্যায় ভাদোদরা থেকে গোরক্ষপুর স্পেশাল ট্রেনে জেনারেল কোচে উঠেছিল দাদা। তবে ট্রেনের মধ্যে প্রচন্ড ভিড় হওয়ার কারণে নিঃশ্বাসজনিত সমস্যায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।’ এ প্রসঙ্গে কানপুর সেন্ট্রাল স্টেশনের জিআরপি ইনচার্জ ওম নারায়ণ সিংহ জানিয়েছেন, ‘ট্রেনের মধ্যে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যাত্রীর।’
অবশ্যই পড়ুন: ফের কেঁপে উঠল পাকিস্তান, বেলুচিস্তানে ৪০০ যাত্রী বোঝাই ট্রেনে IED ব্লাস্ট! লাইনচ্যুত ৬ কামরা
অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন জ্ঞানেন্দ্রর দুই সঙ্গী
শনিবার ভাদোদরা থেকে গোরক্ষপুরগামী এক্সপ্রেস ট্রেনের জেনারেল কামরায় মৃত জ্ঞানেন্দ্র সাথেই ভ্রমণ করছিলেন তাঁর দুই সঙ্গী মিন্টু পাল এবং শ্রীপ্রসদ। জানা গিয়েছে, তাঁরাও দীপাবলীর ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে মৃত যাত্রীর দুই সঙ্গী জানান, ‘আমাদের কোচে যাত্রীদের ভিড় এতটাই ছিল যে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছিল জ্ঞানেন্দ্রর। রবিবার সন্ধ্যায় আমাদের ট্রেন সেন্ট্রাল স্টেশনে পৌঁছলে একসাথে বিপুল সংখ্যক যাত্রী কোচে উঠে আসেন। আর তারপরেই জ্ঞানেন্দ্র শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। পরবর্তীতে রেল পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।’