সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পাহাড়ি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মিরিক ও দুধিয়ার মানুষজনদের পাশে দাঁড়ালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি আশ্বাস দিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাক করে দেবে সরকার। ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে সেতু, এমনকি হারিয়ে যাওয়া ডকুমেন্ট, সবকিছুর দায়িত্ব নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
১৫ দিনের মধ্যেই তৈরি হবে দুধিয়া সেতু
আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মিরিকের দুধিয়ায় ভেঙে পড়া সেতুটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই তৈরি করে দেওয়া হবে। প্রথমে আধিকারিকরা এক মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেই সময়সীমা কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, মানুষ এখন বিপদের মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সেতু নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার একটি স্থায়ী নতুন সেতু তৈরি করার কাজ শুরু করেছে, যা আগামী বছর বর্ষার আগেই সম্পন্ন হবে।
ভাঙা ঘরবাড়ি পুনরায় নির্মাণ করবে সরকার
মুখ্যমন্ত্রী আজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যাদের ঘরবাড়ি এই দুর্যোগের জেরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদেরকে নতুন বাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এর জন্য দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েলকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি দুর্গতরা নিজেদের ঘরে ফিরতে না পারা পর্যন্ত কমিউনিটি কিচেন চালু থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাওয়া যাবে হারানো নথিপত্র
এদিকে এই দুর্যোগের জেরে বহু মানুষের আধার কার্ড, রেশন কার্ড থেকে শুরু করে ভোটার আইডি কার্ড, এমনকি প্যান কার্ড সহ স্কুলের বইখাতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাদের জন্য এবার সরকার বিশেষ ক্যাম্প চালু করবে বলে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবারও ইস্যু করে নেওয়া যাবে। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী এক মাস এই ক্যাম্পগুলি চালু রাখতে হবে। এমনকি যে সমস্ত এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সব জায়গায় এই ক্যাম্প বসানো হবে।।
এদিকে দুধিয়ার গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ১৬ জন আপনজনহারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঘর ভেঙে গেলে আবারও তৈরি করা যায়, তবে মানুষ একবার হারিয়ে গেলে তা আর ফিরে আসে না। তবে যারা রয়েছেন, তাদের পাশে থাকার দায়িত্ব আমাদেরই। তিনি ঘোষণা করেছেন, মৃতদের পরিবারের একজনকে হোমগার্ড পদে চাকরি দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা বা উচ্চতার কোনওরকম বাধ্যবাধকতা থাকবে না। শুধুমাত্র লিখতে বা পড়তে জানলেই হবে।
আরও পড়ুনঃ দীপাবলীতে আর ফেরা হল না বাড়ি! ভিড় ট্রেনে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের
শুধু এখানেই শেষ নয়, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার সহ উত্তরবঙ্গের প্রত্যেকটি জেলায় যে সমস্ত কৃষক এই দুর্যোগের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, কৃষি দপ্তরের আওতায় খুব দ্রুতই সুবিধা দেওয়া হবে। চিন্তা করার কোনও কারণ নেই।