স্কুল থেকে ফুটপাতে! চাকরি হারিয়ে চপের দোকান চালাচ্ছেন মালদার দম্পতি

Published:

Maldah
Follow

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চলতি বছর গত এপ্রিলে এক চরম সর্বনাশ নেমে আসে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের উপর। এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ২৬ হাজার প্রার্থীর চাকরি বাতিল করে দেয়। রাতারাতি চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে সকলের। পরে যদিও স্কুলগুলিতে শিক্ষক পদে পুনর্বহাল করা হলেও শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমতাবস্থায় ভবিষ্যতে সংসার চালানোর জন্য এবার অন্য উপায় খুঁজল মালদহের (Maldah) চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী দম্পতির৷

চাকরি হারিয়ে চপ বিক্রি দম্পতির

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে মালদার তনুশ্রী সাহা সিংহ এবং তাঁর স্বামী বিজয় সিংহ-র। ২০১৮ সালে মালদার রতুয়ার সম্বলপুর অঞ্চল হাইস্কুলে নিয়োগ পান তনুশ্রী সাহা সিংহ। ওই একই স্কুলে স্বামী বিজয় সিংহও চাকরি পান। দু’জনেই স্কুলে শিক্ষাকর্মী পদে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু প্রায় ছয় মাস ধরে চাকরিহারা রোজগার না থাকায় সংসার চালাতে শেষমেশ অন্য রাস্তা খুঁজতে হল তাঁদের। ‘চপ শিল্প’কেই রোজগারের নয়া পথ হিসেবে বেছে নিলেন তাঁরা। সেখানকার রথবাড়ি এলাকায়, জেলা তৃণমূল কার্যালয় থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে ছোট্ট গুমটি ঘর ভাড়া করে শুরু হয় দোকান। তবে দোকানে যে শুধু চপই বিক্রি হয় তা নয় তার সঙ্গে মুড়ি, ঘুগনি, চিপস এবং সিগারেটও পাওয়া যায়।

চাকরি হারানোয় মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করলেন তনুশ্রী

মায়ের এই কঠিন সময় পাশে দাঁড়িয়েছে তনুশ্রীর ছেলে। পড়াশোনার ফাঁকে সেও মায়ের পাশে দোকানে হাত লাগায়। অন্যদিকে স্বামী বিজয় সিংহ সংসার চালাতে এখন গাড়ি চালান। তার সঙ্গে মাঝেমধ্যে চপও ভাজেন। এইভাবেই তাঁরা সংসারটাকে বাঁচিতে রেখেছেন। বিজয় ও তনুশ্রীর দাবি, হাতে জমানো টাকাও শেষ। এই অবস্থায় সংসার চালানো দায়। ছেলে মেয়ে স্কুল পড়ুয়া। তাদের পড়াশোনাও বন্ধ হওয়ার পথে। অনেকদিন বাড়ি থেকেই বের হতে পারেননি তাঁরা। তবে আর নয়, এবার নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে বেছে নিয়েছি এই পথ। এদিন এমন পরিস্থিতির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করছেন তনুশ্রী। তাঁর কথায়, “আমাদের এই পরিণতির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দায়ী। ওনার জন্য এইভাবে আমাদের পথে বসতে হল।”

আরও পড়ুন: কর্মসূচি ভুলে মাইথনে জল ছাড়ার ছবি তুলতে ব্যস্ত তৃণমূলকর্মীরা! ফাঁকা সভায় বক্তৃতা মন্ত্রীর

রাজনৈতিক তরজা

তনুশ্রী সাহা সিংহ এবং বিজয় সিংহের এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাদানুবাদ। মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শুভময় বসু বলেন, ‘কোনও কাজকেই ছোট করে দেখা উচিত নয়। সমস্ত কাজকেই সম্মান দেওয়া উচিত। এ ছাড়া গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরির বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন।’ আর এতেই ফোঁস করে উঠেছেন বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করার পরে চাকরি পেয়েছেন। সেই চাকরি হারিয়ে এখন চপ-ঘুগনির দোকান করেছেন। এই ঘটনার ধিক্কার জানাই। ২৬-এর নির্বাচনে এই সরকারকে জনগণ জবাব দেবে।’

আরওMaldaSSC Scam
গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join