টেট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই হল কাল! হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বীরভূমের শিক্ষকের

Published:

Birbhum
Follow

প্রীতি পোদ্দার, বীরভূম: শাসকদলের কিছু নেতার মদতে এবং দুর্নীতির জেরে বাংলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে কর্মরত হাজার হাজার শিক্ষক শিক্ষিকার নিয়োগ নিয়ে এক বড় প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছে। তার উপর কিছুদিন আগে এসএসসির ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়েছিল। আর তাতেই মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। এরই মধ্যে এ মাসের গোড়ায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাথমিক শিক্ষকদের উদ্দেশে টেট নিয়ে রায় দিতেই মাথায় বজ্রাঘাত পড়ল সকলের। আর সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই এবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বীরভূমের (Birbhum) এক প্রাথমিক শিক্ষকের।

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু!

সপ্তাহখানেক আগে সুপ্রিম কোর্ট সকল প্রাথমিক শিক্ষকদের উদ্দেশে নির্দেশ দিয়েছিল যে, শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য টেট উত্তীর্ণ হতেই হবে। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্যও টেট উত্তীর্ণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। আর এই নির্দেশের পরই তৎপর হয়ে উঠেছিল রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে তারা জেলায় জেলায় কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য চেয়ে পাঠায়। আর তাতেই চাকরি হারানোর আতঙ্ক বাড়তে থাকে অনেকের মনে। এমতাবস্থায় এই মানসিক চাপে পড়ে গত মঙ্গলবার রাতে ঘুমের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বীরভূমের প্রাথমিক শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন সেখ-এর।

সুপ্রিম রায়ে বাড়ে মানসিক চাপ

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১০ সালে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম ব্লকের বরকতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে চাকরিতে যোগ দেন ৩৯ বছর বয়সী গিয়াসউদ্দিন সেখ। তাঁর বাড়ি বীরভূমের নলহাটি থানার বাঁধখেলা গ্রামে। বাড়িতে তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তিনি। সংসার চলছিল তাঁদের ভালোই। এরপর সুপ্রিম কোর্টের টেট নির্দেশের পরে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে যায় প্রাথমিক শিক্ষক সমাজে। তাতেই বাড়ে মানসিক চাপ। আর এই মানসিক চাপই কেড়ে নিল মুর্শিদাবাদের এক প্রাথমিক শিক্ষকের প্রাণ।

আরও পড়ুন: চলছে জোর তোরজোড়, কবে নাগাদ বেরোচ্ছে SSC-র ফল? আভাস দিলেন খোদ চেয়ারম্যান

চাকরির দাবি পরিবারের

পরিবারের দাবি, পরিবারের কাউকে একটি চাকরি দেওয়া হোক। ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গিয়াসউদ্দিনের বাবা। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের খবর পায়, তারপর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল সে। সারাদিন চিন্তা করত। নাবালক ছেলেমেয়ে রয়েছে। বৌমাও গৃহবধূ। এখন কী হবে জানিনা, ওর ছেলে কিছুদিনের মধ্যেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করবে। আমি চাই ওকে অন্তত পক্ষে একটা চাকরি দেওয়া হোক।” একই কথা বলেন মৃত শিক্ষকের মা। তিনি বলেন, “ টেট নিয়ে নির্দেশ আসার পর থেকেই চিন্তা করত। সকালে ঠিক ছিল। তারপর ঘুমের মধ্যেই শেষ হয়ে গেল। সকালে আমি লেবুর রসও করে দিই, খেল। ” ঘটনায় মুর্শিদাবাদের বহরমপুর জুড়ে শিক্ষক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join