সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বাংলা থেকে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিল কাজের সন্ধানে। তবে সেই যাত্রায় হল শেষ যাত্রা। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এক্সপ্রেসওয়ের কাছে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে মুর্শিদাবাদের সাতজন শ্রমিক গুরুতর ভাবে দগ্ধ হয়েছে (Migrant Workers Dead)। এমনকি তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয় এবং বাকি দু’জন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
ঘটনাটি কী?
ঘটনাটি ঘটে সোমবার গভীর রাতে। বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলার বিডাডি এলাকায় একটি ছোট ঘরে একসঙ্গে সাতজন পরিযায়ী শ্রমিক ঘুমাচ্ছিলেন। রান্না সেরে গ্যাস সিলিন্ডারের নব বন্ধ করতেই ভুলে গিয়েছিলেন তাঁরা। এতে সেই সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরোতে থাকে আর রাত দু’টো নাগাদ তাঁদের মধ্যে একজন বাথরুমে যাওয়ার সময় মুখে জলন্ত বিড়ি নিয়ে হঠাৎ করে ঘরে ঢোকেন। আর এতেই ঘটে বিস্ফোরণ। দাউ দাউ করে গোটা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর চোখের নিমিষেই সাত জনের শরীর পুরো আগুনে ঝলসে যায়। পাশের ঘরে থাকা অন্যান্য শ্রমিকরা ছুটে এসে তাঁদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় ভিক্টোরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। তবে চারদিন ধরে চিকিৎসা চলার পর একে একে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার মারা যান চারজন। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়া থানার জাহিদ আলি (৩৫), বহরমপুরের সাফিজুল শেখ (৩৫), মিনারুল শেখ (৩৬) ও জিয়াবুর শেখ (৩৫)। এমনকি শনিবার গভীর রাতে প্রাণ হারিয়েছেন তাজিবুর শেখ (৩০)।
এদিকে বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন দুই শ্রমিক পাঁচপীরতলার হাসান মল্লিক ও নগরজল টিকটিকিপাড়ার নুর জামাল শেখ। হাসানের শ্যালক মহম্মদ মিরাজ যিনি নিজেও পরিযায়ী শ্রমিক, তিনি জানাচ্ছেন, জামাইবাবুকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল থেকে সেন্ট জনস মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, অবস্থা খুবই গুরুতর। জানিনা উনিও বাঁচবেন কিনা।
আরও পড়ুনঃ নিজেকে অরিজিৎ সিং পরিচয় দিয়ে কেনেন গাড়ি, EMI না দেওয়ায় গ্রেফতার শিলিগুড়ির যুবক
এ বিষয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঐক্য মঞ্চের সদস্য আসিফ ফারুক বলেছেন, এই পরিবারগুলির আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। মৃতদেহ দ্রুত গ্রামে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। অন্যদিকে বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি বেঙ্গালুরুর হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। মৃতদেহগুলি ফেরানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।