প্রীতি পোদ্দার, কাটোয়া: দুর্গাপুর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণকাণ্ডকে ঘিরে রীতিমত তোলপাড় পরিস্থিতি রাজনৈতিক অন্দরে। সমাজে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগছে একাধিক, এমতাবস্থায় মমতার এক মন্তব্যকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক বিতর্ক। সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। যদিও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন যে, তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করা হচ্ছে। আর এবার এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা লক্ষ্মীর’ সঙ্গে তুলনা করলেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সুর বেঁধে গাইলেন আবার গানও।
বিরোধী দলকে কটাক্ষ কুণালের
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শনিবার, পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের পঞ্চাননতলা হাই স্কুলের মাঠে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এক বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল। আর সেই অনুষ্ঠানে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ দলের রাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কুণাল ঘোষ। সেখানে দলীয় কর্মীদের আগত বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল দলীয় নেতাদের তরফ থেকে। এমতাবস্থায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা লক্ষ্মীর সঙ্গে তুলনা করলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। শুধু তাই নয় ‘ডাকিনী, যোগিনী, পিশাচ’ বলে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তিনি।
মা লক্ষ্মীর সঙ্গে তুলনা মমতার!
এদিন কুণাল ঘোষ ভরা মঞ্চে সকলের সামনে গায়ক সলিল চৌধুরীর কথা ও সুর দেওয়া হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে বিখ্যাত গান ‘কোনও এক গাঁয়ের বধূর কথা তোমায় শোনাই শোনো’ গেয়ে ওঠেন। ওই গানের মধ্যেই রয়েছে ‘গাঁয়ের বধূর শাঁখের ডাকে, লক্ষ্মী এসে ভরে দিত, গোলা সবার ঘরে ঘরে’ লাইন। আর সেই কথাতেই মমতার তুলনা টানলেন তিনি। এই কথার রেশ ধরেই কুণাল বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন মা লক্ষ্মী। আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন সেটা মনে রাখুন। দুর্গাপুজোয় পুজো কমিটি গুলোকে আর্থিক অনুদান দেন। যাকে কেন্দ্র করে কুমোর পাড়া থেকে ফুল চাষী সকলে উপকৃত হন। বড় আর্থিক লেনদেন হয়। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। দুর্গাপুজো যেভাবে বৃহৎ উৎসবে রূপ নেয় সেখানে সবার যোগদান থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান সকলের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো হোক।”
নিজের বক্তব্য নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নানারকম তুলনা করা যায়। মা দুর্গার তুলনা করা যায়, মা লক্ষ্মীর তুলনা করা যায়। ব্যাপারটা হচ্ছে ডেভলপমেন্ট, সম্প্রীতি, সমৃদ্ধি, শান্তি তাঁর প্রতীক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই হিসেবেই তুলনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক স্বার্থে আমার কথা বিকৃত করা হচ্ছে!’ উত্তরবঙ্গে গিয়ে বিরক্তি প্রকাশ মমতার
সরব হলেন সজল ঘোষ
এদিকে কুণালের এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। তিনি বলেন, “কুণাল ঘোষরা যে করে খায়, তাতে তো মা লক্ষ্মী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে এদের অনেকের বাড়িতে হাঁড়ি চড়ত না।” তবে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোনো ভগবানের সঙ্গে তুলনা করা হল তা নয়, এর আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চৈতন্যদেবের প্রকৃত উত্তরসূরি বলেও দাবি জানিয়েছেন। তার আগে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন মা সারদা।