‘গণধর্ষণ নয়, গোটা ঘটনায় ধর্ষক একজনই!’ দুর্গাপুরের ধর্ষিতার বয়ানে ঘুরে গেল মোড়

Published:

durgapur rape case
Follow

প্রীতি পোদ্দার, দুর্গাপুর: দুর্গাপুর (Durgapur) মেডিকেল কলেজের পড়ুয়ার ধর্ষণকাণ্ডে কার্যত তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। মেয়েদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরে গণধর্ষণের অভিযোগে পাঁচ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এবার দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডের ঘটনায় উঠে এল আরেক নয়া তথ্য! নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, এটা গণধর্ষণ নয়, গোটা ঘটনায় ধর্ষক নাকি একজনই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নির্যাতিতা মেডিক্যাল পড়ুয়ার সহপাঠীকেও।

পুলিশের তদন্তে এসেছে সহপাঠী বন্ধুর ভূমিকা

গত শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। ওই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ওড়িশার বাসিন্দা কলেজের হস্টেল থেকে এক বন্ধুর সঙ্গে খাবার খেতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, ফেরার পথে তাঁকে জোর করে একটি নির্জন জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। পালিয়ে যায় সেই সহপাঠী বন্ধু। জঙ্গলে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং ৩ হাজার টাকা চায়। মেয়েটি টাকা দিতে না পারায় তাঁকে আরও মারধরও করা হয়। এমতাবস্থায় সহপাঠী বন্ধুর ভূমিকাও পুলিশের তদন্তের আওতায় এসেছে। তাঁর আচরণ ও ঘটনার সময় উপস্থিতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

গ্রেপ্তার নির্যাতিতার ওই সহপাঠী বন্ধু

নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকদিন ধরেই জেরার মুখে পড়েছিল নির্যাতিতার ওই সহপাঠী বন্ধু। অবশেষে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই মেডিক্যাল পড়ুয়ার সহপাঠীকে। ইতিমধ্যেই পুলিশের জবরদস্ত অভিযানের পরই বয়ান রেকর্ড অনুযায়ী পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন বেসরকারি হাসপাতালের প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী, একজন কর্মী এবং স্থানীয় পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এক ধৃত ও নির্যাতিতার সহপাঠীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ঘটনার পুনর্গঠন করেছে। কমিশনার জানান, অভিযুক্তদের পোশাক বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

বিস্ফোরক বয়ান নির্যাতিতার

ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল এক সাংবাদিক বৈঠকে আসানসোল–দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন ভিক্টিমের স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে আরও প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সম্প্রতি নির্যাতিতা তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন যে, “গণধর্ষণ নয়, গোটা ঘটনায় ধর্ষক একজনই।” তবে ধৃত সকলের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাদ যাবে না বন্ধুর ভূমিকাও। তাঁকেও টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাই তাঁর জামা-কাপড় পরীক্ষার জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশি তদন্তে উদ্ধার হয়েছে নির্যাতিতার মোবাইল ফোন। বাকি প্রত্যেক অভিযুক্তের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানান সিপি।

আরও পড়ুন: ঘৃণ্য অপরাধকে প্রশ্রয় নয়! দুর্গাপুর কাণ্ডে পালাতে চাওয়া ধর্ষক দাদাকে ধরিয়ে দেয় খোদ বোন

বর্তমানে নির্যাতিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং পুলিশ প্রশাসন তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্তের তদারকি করছেন আসানসোল–দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুনীল চৌধুরী নিজে। অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে দুর্গাপুরের মেডিক্যাল কলেজ এলাকা এবং আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘটনা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join