প্রীতি পোদ্দার, বীরভূম: কিছুদিন আগে তারকেশ্বর থানার মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি নিতে এক তোলপাড় কাণ্ড ঘটেছিল। সেক্ষেত্রে ওই মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা উঠেছিল হাইকোর্টে। কিন্তু তবুও রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলার প্রবণতা কমেনি পুলিশের। আর এবার সেই একই অভিযোগ উঠল বীরভূমের (Birbhum) দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে।
ভাইরাল অডিও ও ভিডিও ক্লিপ
গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, প্রেস মিটে বীরভূম জেলা ট্রাক অ্যাসোসিয়েশন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আনাশ আহমেদ জানান, গত ২৩ সেপ্টেম্বর, সংগঠনের এক ট্রাক মালিক ইন্দ্রাদুল হোসেনের দু’টি ট্রাক বীরভূমের পুলিশ ধরে। পরে কোর্টের তরফ থেকে ট্রাক রিলিজ অর্ডার মিললেও সেই আদেশ মানেনি এএসআই শাইফুল ইসলাম ও কিরণ মন্ডল। শুধু তাই নয় তাঁদের আরও অভিযোগ যে ইন্দ্রাদুল হোসেনকে ফোনে চাপ সৃষ্টি করে বলে দু’টি ট্রাকের জন্য ৭০ হাজার টাকা করে দিতে হবে, নইলে NOC দেওয়া হবে না। আনাশ আহমেদ জানিয়েছেন অভিযোগ প্রমাণের জন্য আমাদের কাছে ফোনালাপের অডিও ও ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। প্রকাশ্যে আনা হয় সেইসব।
মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি পাঠানোর হুঁশিয়ারি
ট্রাক অ্যাসোসিয়েশন সংগঠনের তরফে প্রকাশ্যে আনা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এএসআই শাইফুল ইসলাম ও কিরণ মন্ডল নিজে হাতে টাকা নিচ্ছেন। তাই এবার আইন রক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক আনাশ আহমেদ জানিয়েছেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ ডিএম, এসপি, ডিআরজি স্যার, ডিজি স্যার এবং মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাব।” তবে ট্রাক সংগঠন শুধুমাত্র এএসআই শাইফুল ইসলাম ও কিরণ মন্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তা নয়, এর সঙ্গে মহম্মদবাজার থানার আইসি প্রসেনজিৎ ঘোষ এর বিরুদ্ধেও আনা হয় অভিযোগ। তিনজন মিলে টাকা আদায়ের র্যাকেট চালানো হচ্ছে বলে দাবি তোলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে বাগডোগরার আবর্জনার স্তূপ ঢাকা হল নীল সাদা কাপড়ে
বিবৃতি প্রকাশ বীরভূম পুলিশের
এদিকে ঘুষ তোলার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে বীরভূম জেলা পুলিশ। তড়িঘড়ি গতকাল সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিবৃতি প্রকাশ করেন তাঁরা। সেখানে বলা হয়, “সমাজমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে যেখানে মহম্মদবাজার থানার দু’ই অফিসারকে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। তাদের তাৎক্ষণিকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। বীরভূম জেলা পুলিশ এই ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হবে।”