বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গুজরাটের সবরমতি থেকে হরিয়ানার গুরুগ্রাম পর্যন্ত 895 কিলোমিটার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার এক বিশেষ মহড়ায় নেমেছিল দেশের সর্বোচ্চ আলোচিত ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। তবে প্রথম মহড়াতেই একেবারে ডাহা ফেল করল দেশের উচ্চগতির এক্সপ্রেসটি।
জানা গিয়েছে, সবরমতি থেকে গুরুগ্রাম পর্যন্ত দীর্ঘ পথ মাত্র 14 ঘন্টা 55 মিনিটে পার করার লক্ষ্যে ছুটলেও শেষ পর্যন্ত গোটা পথ অতিক্রম করতে 20 ঘন্টার বেশি সময় নিয়েছে বন্দে ভারত। শুধু তাই নয়, মাঝপথে নাকি এই ট্রেন কিছু সময়ের জন্য ভ্যানিশও হয়ে যায়। ঠিক কী ঘটেছিল মহড়ায়?
প্রথম মহড়াতেই ব্যর্থ বন্দে ভারত
ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত 5 এবং 6 অক্টোবর দু’দিন সবরমতি থেকে গুরুগ্রাম পর্যন্ত বন্দে ভারতের মহড়ার পরিকল্পনা করেছিল ভারতীয় রেল। প্রাথমিকভাবে আশা করা হয়েছিল, 895 কিলোমিটারের দীর্ঘ যাত্রাপথ মাত্র 15 ঘন্টায় পার করবে এই এক্সপ্রেস ট্রেন। গতিবেগ ধরা হয়েছিল 60 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। তবে শেষ পর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি বন্দে ভারত।
ভারতীয় রেল সূত্রে খবর, মহড়ায় অংশ নেওয়া বন্দে ভারতটির রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ওভারহেড তারের উচ্চতা। জানা যায়, ওই ট্রেন নাকি তার যাত্রাপথে মেহসানা, পালনপুর, আবু রোড, মারওয়ার, আজমের, জয়পুর, আলওয়ার এবং রেওয়ারি স্টেশনে দাঁড়াবে। মূলত এমন পরিকল্পনাই করা হয়েছিল ভারতীয় রেলের তরফে। যদিও এই রুটের বেশিরভাগ অংশ ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেড করিডোরের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই এই অংশে নিয়মিত ডবল স্ট্যাক কন্টেনার ট্রেন যাতায়াত করে।
অবশ্যই পড়ুন: “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে সবচেয়ে বেশি খুন, ধর্ষণ বাংলায়!” বিস্ফোরক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সূত্রের খবর, এই অংশে যাতে ডবল স্ট্যাক কন্টেনার ট্রেন যাতায়াত করতে পারে সেজন্য যাত্রাপথে দীর্ঘ অঞ্চলে ওভারহেড লাইনের উচ্চতা পাঁচ মিটার থেকে বাড়িয়ে 7.3 মিটার করা হয়েছিল। আর সেটাই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বন্দে ভারতের। আসলে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের প্যানটোগ্রাফ এত উচ্চতার ওভারহেড থেকে বিদ্যুৎ নিতে অসমর্থ। যার জেরে ওই রুটে ট্রেন চালানো যে সম্ভব নয়, সেটা বুঝতে পারেন রেল কর্তারা। এদিকে শেষ মুহূর্তে জানতে পাড়ায় দ্বিতীয় বিকল্প ছিল না রেল কর্তাদের কাছে।
বলা বাহুল্য, মহড়ার প্রথম দিন ট্রেনটিকে নির্ধারিত রুটে চালানোর বদলে আহমেদাবাদ থেকে উদয়পুর রুটে চালানো হয়। একইভাবে দ্বিতীয় দিন ওই ট্রেন চলেছিল ভাদোদরা এবং ছায়াপুরী জংশনের মধ্যে। এক কথায় বলা যেতে পারে, রেলের তরফে ঘোষিত সবরমতি থেকে টানা গুরুগ্রাম পর্যন্ত রুটে মেহসিনার রুট থেকে আচমকা ভ্যানিশ হয়ে গিয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনটি আহমেদাবাদের রুটে চলেছিল। যদিও এই ঘটনায় অসন্তুষ্ট রেল কর্তাদের একটা বড় অংশ। তাঁদের কথায়, ‘বন্দে ভারতের মহড়ার জন্য রুট নির্বাচন একেবারেই সঠিক হয়নি….’