প্রীতি পোদ্দার, মুর্শিদাবাদ : নকল পুলিশ সেজে পুলিশের গাড়িতে করে ব্যবসায়ীকে অপহরণ! তাজ্জব গোটা পুলিশ প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ডোমকল থানা এলাকায়। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে এক মুদি ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে মোট আট জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যাদের মধ্যে একজন আবার সিভিক ভলান্টিয়ার। আর তাই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব।
ঘটনাটি কী?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বুধবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানার বাজিতপুর শেখপাড়া এলাকার জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে লাল চাঁদ মণ্ডল নামে স্থানীয় এক মুদি ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়িতে ভুয়ো পুলিশ সেজে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরিবার। এদিকে অভিযোগ পেয়েই তৎপর হন ডোমকল থানার আইসি পার্থসারথি মজুমদার। টিম তৈরি করে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা শুরু হয়। তারপরেই শুরু হয় অভিযান। রাতভর অভিযান চালিয়ে অবশেষে ভোরের দিকে ওই ব্যবসায়ী লাল চাঁদ মণ্ডলকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় আট অভিযুক্তকে। চারটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ
পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে মুদি ব্যবসায়ীর অপহরণের ঘটনায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয়েছিল সাত অভিযুক্তকে। তারা হলেন মমিনুল ইসলাম, সুমন মন্ডল, আজমির মন্ডল, ইমান উল কবির ,আনসারুল আনসারী, নয়ন শেখ ও হুমায়ুন কবীর। এরা সকলেই ডোমকলের বাসিন্দা। আর এই অভিযুক্তদের মধ্যে হুমায়ুন কবীর হলেন ওই ডোমকল থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার। এরপর শুরু হয় জেরা, একের পর এক তথ্য বেরিয়ে আসে। আর সেই জেরার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় মহম্মদ আলী মুবারক নামের আরও একজনকে। জানা গিয়েছে ইনি ডোমকলের প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ।
আরও পড়ুন: ভোটের জন্য ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা তোলার নিদান তুফানগঞ্জের তৃণমূল নেতার
প্রশাসনের সিস্টেম নিয়ে কটাক্ষ বিজেপির
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার অপহরণের ঘটনায় ধৃতদের বহরমপুর জেলা আদালতে তোলা হয়। ১০ দিনের হেফাজত চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনায় ফের সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম জড়াতেই রাজনৈতিক অন্দরে তৈরি হল আরেক চাপানউতোর পরিস্থিতি। তাঁদের এই জুলুমবাজির কারণ যে তৃণমূল সেই অভিযোগই তুলছে বিজেপি। পাশাপাশি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে তারা। তবে সেই সকল অভিযোগকে তোয়াক্কা না করে ডোমকল ব্লক তৃণমূল সভাপতি হাজিকুল ইসলাম জানিয়েছেন গোটা ঘটনায় প্রশাসন তৎপর ভাবে তদন্ত করছে।