সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কেঁচো খুঁড়তে গিয়েই যেন বেরিয়ে আসলো আস্ত কেউটে! হ্যাঁ, আইপিএস অফিসারের (IPS Officer) বাড়ি থেকেই উদ্ধার কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, পাঞ্জাবের রোপড় রেঞ্জে কর্মরত উচ্চ পদস্থ আইপিএস অফিসার, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল হরচরণ সিং ভুল্লারকে সম্পত্তি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর তাঁর বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা সহ আরও অনেক কিছু।
ঘটনাটি কী?
রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, হরচরণ সিং ভুল্লার নামের ওই ইন্সপেক্টরের মামলাটি শুরু হয়েছিল ৮ লক্ষ টাকার একটি ঘুষের দাবিকে কেন্দ্র করে। তবে পরে তদন্ত করে তাঁর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যায়। এমনকি তার মধ্যে ৫ কোটি টাকা নগদ, বিলাসবহুল গাড়ি, সোনার গয়না সহ দামি দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, মদও ছিল।
উল্লেখ্য, হরচরণ সিং হুল্লারের সাথে কৃষ্ণা নামের এক ব্যক্তিও জড়িত ছিল। আর তিনি মূলত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। পুলিশ তাকেও গ্রেফতার করেছে। সিবিআই জানিয়েছে, এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চলা মামলা সমাধানের জন্য অফিসার ঘুষ দাবি করেছিলেন। এমনকি কৃষ্ণার মাধ্যমেই তিনি ওই ঘুষের টাকা হাপিশ করতেন।
🚨Big Bust!
CBI Arrests Punjab DIG in ₹8 Lakh Bribery Case, 2009-batch IPS officer Harcharan Singh Bhullar, DIG Ropar Range (Punjab)
During raids in Punjab & Chandigarh, CBI recovers:
• ₹5 crore cash (and counting)
• 1.5 kg jewellery
• Mercedes & Audi keys
• 22 luxury… pic.twitter.com/WD7M5o3sh1— Nabila Jamal (@nabilajamal_) October 16, 2025
কে এই হরচরণ সিং ভুল্লার?
বলে দিই, হরচরণ সিং ভুল্লার ২০১৯ সালের ব্যাচের আইপিএস অফিসার। তিনি মূলত মোহালি, ফতেহগড় সাহেব, গুরদাসপুরসহ সহ একাধিক জেলার এসএসপি ছিলেন। পাশাপাশি পটিয়ালা রেঞ্জের ডিআইজি এবং ভিসিলেন্স ব্যুরো যুগ্ম পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি পাঞ্জাবের রোপাড় রেঞ্জে কর্মরত। এছাড়া ২০২১ সালে তিনি একটি হাই প্রোফাইল ড্রাগ পাচারের তদন্তে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জানা যাচ্ছে, তিনি ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকেই রোপাড় রেঞ্জের ডিআইজি পদে কর্মরত।
তবে হ্যাঁ, তাঁর বিরুদ্ধে এই ঘুষের মামলার সূত্রপাত হয় আকাশ বট্টা নামের পাঞ্জাবের ফতেহগড় সাহেব এলাকার এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীর অভিযোগ থেকেই। তিনি সে সময় অভিযোগ করেছিলেন যে, ডিআইজি ভুল্লার তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছিলেন। এমনকি হুমকি দিচ্ছিলেন, প্রথমে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষের আর পরে মাসে মাসে টাকা দাবি করেছিলেন। এমনকি ওই টাকা দিতে বলেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ কৃষ্ণার মাধ্যমেই। তবে সিবিআই তখন চন্ডিগড় সেক্টর ২১-এ ফাঁদ পেতেছিল। আর কৃষ্ণাকে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ নিতে দেখেই হাতেনাতে ধরে ফেলে। এরপর একটি পরিকল্পিত ফোনেই ডিআইজি ভুল্লার টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন যে, দু’জনকেই অফিসে আসতে। সেই প্রমাণের ভিত্তিতেই সিবিআই দল মোহালির অফিস থেকে হরিচরণকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুনঃ তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আরও ২৯ হাজার কোটি নেওয়ার পথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার
জানা যাচ্ছে, গ্রেফতার করার পর সিবিআই মোহালি ও চন্ডিগড়ে ভুল্লারের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে চালিয়েছে। আর সেখান থেকে মোট ৫ কোটি টাকা নগদ, ১.৫ কেজি সোনার গয়না, পাঞ্জাবজুড়ে বহু অবৈধ জমির কাগজপত্র, মার্সেডিস এবং অডি গাড়ির চাবি, ২২টি দামি হাতঘড়ি, লকারের চাবি সহ ৪০ লিটার বিদেশী মদ, এমনকি বন্দুক, রিভলভার, পিস্তল সহ বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষ্ণার বাড়ি থেকেও অতিরিক্ত ২১ লক্ষ টাকা নগদ পাওয়া গেছে। আর সিবিআই দু’জনকে শুক্রবার আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে। বর্তমানে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।