প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই দলের তরফ থেকে যাতে কোনো ত্রুটি না পাওয়া যায় তার জন্য এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলি জোর কদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমতাবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফের সাংগঠনিক পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। পঞ্চায়েতের পর এবার পুরসভাগুলিতে সংগঠনে রদবদলের উপর নজর দিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। বৃহস্পতিবার ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন যে দলের সাংগঠনিক রদবদল হতে চলছে এবং এই পরিবর্তন হবে একমাত্র পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে।
চেয়ারম্যান, কাউন্সিলারদের রদবদল
বিগত কয়েকদিন ধরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুরসভা স্তরে দলের লোকসভা ভোটের ফলাফলের বিশ্লেষণের কাজ নিয়ে নানা সমীক্ষা করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে পুরসভা স্তরে শাসকদলের রাজত্ব থাকা সত্ত্বেও গত লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবির বেশ ভালো সাফল্য অর্জন করেছিল। আর এই সাফল্যের নেপথ্যে দায়ী করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলারদের একাংশের দায়সারা মনোভাব, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে দলের নিষ্ক্রিয়তা। তাই এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগামী কিছু দিনের মধ্যেই বিভিন্ন পুরসভায় চেয়ারম্যান অথবা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রদবদল করতে চলেছেন তিনি।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
যদিও এই রদবদল নিয়ে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরের ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছিলেন, “লোকসভা ভোটে কোনও পুরসভায় তৃণমূল পিছিয়ে থাকলে সেখানে শুধু চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে তা নয়। টাউন সভাপতির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং পঞ্চায়েতে পিছিয়ে থাকলেও শুধু গ্রাম প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে”। তাইতো কিছুদিন আগেই ব্লক ধরে ধরে সেই রদবদল করে ফেলেছেন অভিষেক।
একই নিয়ম খাটবে কলকাতা পুরসভায়?
শাসকদলের তরফে জানা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী দিনে রাজ্যের অনেক পুরসভায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বদল করতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তবে সেক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভায় এখনই এই বদল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে ওয়েবকুপা, মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনে যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা উপযুক্ত নন বলে দাবি তোলা হয়েছে তাই এই তিনটি সংগঠন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিছু দিন পরে এই তিনটি সংগঠন পুনর্গঠিত হবে। সবমিলিয়ে পুরসভা ও ব্লক স্তরে জোড়াফুলের আধিপত্য বজায় রেখে নির্বাচনের ফলাফল সঠিক রাখতে উঠে পড়ে লেগেছে সকলে।
আরও পড়ুন: CBI-র মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিরাট স্বস্তি পেলেন রাজীব কুমার, ২ মাস পর ফের শুনানি
প্রসঙ্গত, ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে ডিজিটালের মাধ্যমে ভোট প্রচারের জন্য বড়সড়-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিন রাজ্যে বিজেপির একের পর এক ‘বাংলা-বিরোধী’ মন্তব্যের কড়া জবাব দিতে এবার ডিজিটাল লড়াইয়ের মাধ্যমে ময়দানে নামতে চলেছে তৃণমূলের ডিজিটাল বাহিনী। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’। এই সংগঠনে দলের তরুণদের এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।