প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর ৮ আগস্ট গভীর রাতে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ করে খুন করা হয় এক চিকিৎসককে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ আগস্ট বাংলা জুড়ে ‘রাত দখল’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। আর সেই ঘটনার ১ বছর পার হতে না হতেই ফের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হল আরেক ডাক্তারি পড়ুয়া। যার ফলে সমাজে মেয়েদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ফের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। এমতাবস্থায় দুর্গাপুরের (Durgapur) ধর্ষণ কাণ্ডে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে এল তদন্তকারী পুলিশের হাতে।
সহপাঠীই নির্যাতিতার প্রেমিক!
দুর্গাপুর কাণ্ডে তদন্তকারী পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে গত শুক্রবার নির্যাতিতা পড়ুয়া যে সহপাঠী বন্ধুর সঙ্গে রাতের অন্ধকারে বেরিয়েছিল তার সঙ্গে নাকি নির্যাতিতার প্রেমের সম্পর্ক ছিল! আর এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে। পুলিশের দাবি, ঘটনার দিন রাতে পরিকল্পনামাফিক প্রেমিকের সঙ্গে দুর্গাপুরের ওই অভিশপ্ত জঙ্গলে যাচ্ছিলেন নির্যাতিতা। সেই সময় পিছন থেকে আচমকা তিন দুষ্কৃতী হানা দেয়। ইতিমধ্যেই পুলিশের দাবি, নির্যাতিতা ও তাঁর প্রেমিক তথা সহপাঠী জানিয়েছেন ঠিক কী ঘটেছিল ওই রাতে। যদিও তারা বারবার বয়ান বদল করছে।
নির্যাতিতার বয়ানে নয়া তথ্য
তদন্তকারী পুলিশের কাছে নির্যাতিতা ও তাঁর প্রেমিক দাবি করেছেন যে, ওই তিন দুষ্কৃতী নির্যাতিতা এবং সহপাঠী বন্ধুর মোবাইল ছিনতাই করে তাঁদের কাছে টাকা চায়। আর সেটি দিতে না পারায় অভিযুক্তেরা প্রেমিককে নাকি হস্টেলে ফেরত পাঠায় টাকা আনতে। অভিযোগ, তখনই তিন দুষ্কৃতীর একজন তরুণীকে ধর্ষণ করে। এরপর সহপাঠী ফিরলে বাকি দু’জন নাকি নির্যাতিতাকে তুলে দেয় ওই সহপাঠী বন্ধুর হাতে। যদিও এই দাবি আদৌ সত্য কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কিন্তু ঘন ঘন কেন তাঁরা বয়ান পাল্টাচ্ছেন তা নিয়ে বেশ সন্দেহ জাগছে সকলের মনে।
আরও পড়ুন: নেওয়া হবে ব্যবস্থা! নির্বাচনের আগেই বহু পুরসভায় বদলাতে পারে চেয়ারম্যান
অন্যদিকে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পাঁচ দিন পর আবার নতুন করে ‘ক্রাইম সিন’ অর্থাৎ জঙ্গলে যান পুলিশ। সেখানকার বেশ কিছুটা জায়গা নজরদারি করেন তারা। এদিন নতুন করে আরও ৫৫ মিটার এলাকা কর্ডন করে দেওয়া হয়। আর তাতেই সন্দেহ জাগে তাহলে কি নতুন কোনও প্রমাণের খোঁজ মিলেছে? এদিকে দুর্গাপুরের চিকিৎসক ছাত্রীকে নির্যাতনের তদন্তে দুর্গাপুর পুলিশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন সাইবার বিশেষজ্ঞ ও কলকাতা হাই কোর্টের আইনিজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা, এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায়, সিআই (এ) রণবীর বাগ।