প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যজুড়ে বেড়েই চলেছে বেআইনি টোটোর দাপট। যার জেরে দুর্ঘটনার খবর প্রায় প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে। তাই এবার রাজ্যের টোটো চালকদের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এখন থেকে রাজ্যের সমস্ত টোটো চালকদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার পর ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving Licence) প্রদান করা হবে। এমতাবস্থায় রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত প্রস্ফুটিত হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
টোটো রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কড়াকড়ি প্রশাসন
যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং টোটো চালকদের সঠিক রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার গত ১৩ অক্টোবর থেকে টোটো রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু করেছে। যা চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। দফতরের তরফ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে এই সময়ের মধ্যে সমস্ত টোটো মালিকদের তাদের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াটিকে আরও স্বচ্ছ এবং আধুনিক করার জন্য একটি নতুন অনলাইন পোর্টাল চালু করা হয়েছে। জানা গিয়েছে রেজিস্ট্রেশনের পর প্রতিটি টোটোকে একটি করে QR কোড সহ একটি অস্থায়ী টোটো এনরোলমেন্ট নম্বর দেওয়া হবে। শুধু তাই নয় টোটো চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও এবার বড় উদ্যোগ নিতে চলেছে রাজ্য পরিবহন দফতর। পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে, এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যের টোটো চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং চালকদের পেশাগত স্বীকৃতি মিলবে।
ভিন্ন মত প্রকাশ শুভেন্দু অধিকারীর
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, ‘‘টোটোর নিবন্ধন হয়ে গেলে টোটো চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে আমাদের খুব একটা অসুবিধা হবে না। কারণ, হাতে এক বার টোটোর প্রকৃত সংখ্যা পেয়ে গেলে লাইসেন্স দিতে জেলাভিত্তিক অফিসগুলি সক্রিয় হয়েই সেই কাজ করে দেবে।’’ অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে টোটো চালকদের আর দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করতে হবে না ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে। এদিকে রাজ্য সরকারের এই ই-রিক্সা ও টোটোর নিবন্ধনের পদক্ষেপকে মেনে নিতে নারাজ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার মতে, এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াটি আসলে টাকা তোলার একটি কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। যদিও প্রশাসন এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: ‘এক সেকেন্ডের জন্য আমরা গণতন্ত্রের চিন্তা থেকে সরলে…’ বিজেপিকে ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি সোহমের
উল্লেখ্য, রাজ্য পরিবহন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে একাধিক সুবিধা হবে। রাস্তার আনাচে কানাচে টোটোর দাপট নিয়ন্ত্রণ করা যাবে অর্থাৎ রাজ্যের মোট টোটোর সংখ্যা জানা যাবে, যা যানজট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। টোটোগুলিকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনায় সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। এছাড়াও চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল নতুন নিয়মের ফলে বেআইনিভাবে টোটো তৈরি এবং বিক্রি করা বন্ধ হবে।