বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: শনির সন্ধ্যায় এক উত্তেজনাপূর্ণ ডার্বির সাক্ষী থেকেছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। ম্যাচের শুরু থেকেই মস্তানি করে মাঠ দখল করে রেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। শুরুর 15 মিনিট মোহনবাগানের খেলায় দম থাকলেও সময় যত গড়িয়েছে, বাগানের রক্ষণভাগ ক্রমশ হালকা হয়েছে। সেই সাথেই বেশ কিছু সুযোগ নষ্টের রোগ নিয়ে ভুগেছিল সবুজ মেরুন। তবে ভাগ্য কখন কার উপর সহায় হয় সে কথা বলা বড় কঠিন। গতকাল প্রথম গোল করে এগিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল যে ম্যাচের (East Bengal Vs Mohun Bagan) শেষে একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরবে সে কথা কে জানত। ড্র নিয়ে 90 মিনিট সঙ্গে অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে বিশাল কাইথের দমেই জিতে যায় মোহনবাগান। কোথায় হারল লাল হলুদ?
এই চার কারণে শিল্ড ফাইনালে হেরেছে ইস্টবেঙ্গল
বিশালের গোল সেভ
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ হোক কিংবা ডুরান্ড কাপ বহুবার ফাইনালের মঞ্চে পেনাল্টি শুট আউটে মোহনবাগানের হয়ে উদ্ধারকারীর ভূমিকা পালন করেছেন গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। শনিবারও সেই একই চিত্র দেখল বঙ্গবাসী। নির্ধারিত 120 মিনিটের ম্যাচে প্রতিপক্ষকে আটকে দিয়ে পেনাল্টি শুট আউটে জয় গুপ্তার শট থেকে গোল বাঁচিয়ে দেন বিশাল। আর তাতেই ভাগ্যের মুখ খুলে ফেলে সবুজ মেরুন। জিতে যায় হোসে মোলিনার দল।
পেনাল্টিতে ইস্টবেঙ্গলের ভুল স্ট্র্যাটেজি
গতকাল মোহনবাগানকে নির্ধারিত সময়ের ম্যাচে আটকে রেখে পেনাল্টিতে কুপোকাত হয়ে যাওয়ায় ইস্টবেঙ্গলকে ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। বহু ফুটবল বিশেষজ্ঞের মত, কোচ অস্কার ব্রুজোর উচিত ছিল 120 মিনিটের ম্যাচেই খেলা শেষ করা। তা যখন হল না তারপর হঠাৎ ডাগআটট থেকে দেবজিৎ মজুমদারকে নামালেন তিনি। এই কাজটা একেবারেই ঠিক হয়নি। গোটা ম্যাচে ভালই খেলেছেন প্রভসুখন গিল। কাজেই তাঁকে দিয়েই পেনাল্টি রক্ষার কাজটা করতে হতো লাল হলুদকে। তাছাড়াও অনেকেই বলছেন, আনোয়ার আলি, মহম্মদ রশিদ থাকা সত্ত্বেও কঠিন পরিস্থিতিতে জয়কে দিয়ে পেনাল্টি করানোর সিদ্ধান্তটা খুব একটা ঠিক নেয়নি, লাল হলুদ। সেটাও ইস্টবেঙ্গলের হারের অন্যতম কারণ।
অবশ্যই পড়ুন: কামব্যাক ম্যাচে শূন্য বিরাটের, ৮ রানে ফিরল রোহিতও! অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দৈন্যদশা ভারতের
ফাইনাল থার্ডে ব্যর্থতা এবং ভাগ্য
শনিবার ডার্বির একেবারে শুরু থেকেই বিচক্ষণ ফুটবল খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে প্রতিপক্ষ মোহনবাগানকে বারবার আটকে দিয়েছেন অস্কারের ছেলেরা। তবে ফাইনাল থার্ডে পৌঁছে আচমকা ছন্দপতন হয় ইস্টবেঙ্গলের। এই সময়ে ফুটবল পায়ে খুব একটা দাগ কাটতে পারেননি মহেশ থেকে শুরু করে রশিদরা। অনেকেই, ফাইনাল থার্ডের ব্যর্থতাও লাল হলুদের হারের অন্যতম কারণ। তাছাড়াও ভাগ্য তো রয়েছেই। হয়তো সে কারণেই লাল হলুদের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেছিলেন, ‘কারও বারে লেগে বল গোল চলে যায়, কারও বারে লেগে বল ফেরত আসে।”