সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ দাবি দাওয়া এবং ধর্মঘটের পর অবশেষে নত হল প্রশাসন। আরামবাগ রামকৃষ্ণ সেতুর (Arambagh Ramkrishna Bridge) উপর থেকে হাইট বার অনেকটাই তুলে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে রবিবার সকাল থেকে সেতুর উপর দিয়ে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু হ্যাঁ, সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ এখনও পর্যন্ত মেরামত হয়নি। আর তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে গ্রামবাসী ও নিত্য যাত্রীরা।
আড়াই মাস ধরেই বন্ধ ছিল বাস ও ট্র্যাক চলাচল
সূত্রের খবর, গত আড়াই মাস ধরে রামকৃষ্ণ সেতুর উপর দিয়ে বাস ও ট্র্যাক চলাচল বন্ধ ছিল। কারণ, কয়েক মাস আগে সেতুর একটি বড় অংশ ভেঙে পড়ে। এর ফলে প্রশাসন যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এমতাবস্থায় আরামবাগ এবং আশেপাশের এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়ে।
আর এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে আরামবাগ ব্যবসায়িক সমিতি মহকুমা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানায় এবং দ্রুত সেতু মেরামতের দাবি জানিয়েছিল। পাশাপাশি বাস মালিক সংগঠনরাও প্রশাসনের উদাসীনতার প্রতিবাদ জানিয়ে দু’দিন ধরে বাস ধর্মঘট করে। পরে প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে, হাইট বার তুলে দেওয়া হবে। সেমতাবস্থায় আজ সকালে হাইট বার তুলে দেওয়ায় আবারও নিয়মিত বাস চলাচল শুরু হয়।
জারি হয়েছে কিছু বিধিনিষেধ
তবে হাইট বার তুলে দিয়ে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা হলেও কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। জানা যাচ্ছে, এবার সকাল ছ’টা থেকে রাত দশটা পর্যন্তই সেতুর উপর দিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে। রাত দশটা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত এই সেতু দিয়ে কোনওরকম বাস চলতে পারবে না। এমনকি যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ প্রশাসন। এ বিষয়ে পিডব্লিউবিডি’র এক আধিকারিক জানিয়েছে, “যতদিন না পর্যন্ত সেতু মেরামত করা হচ্ছে, ততদিন এই বিধিনিষেধ জারি থাকবে।”
আরও পড়ুনঃ ধনতেরাসের পর অনেকটাই কমল সোনা, রুপোর দাম! আজকের রেট
উল্লেখ্য, এখনও ওই ভাঙা সেতু দিয়েই যাত্রীবাহী বাসগুলি সীমিতভাবে চলাচল করছে। তবে দূরপাল্লার বড় বড় বাস হাইট বার অতিক্রম করতে পারছে না। আটকা পড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছে, সেতুটি দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা হতে পারে। এখন রামকৃষ্ণ সেতুর অস্থায়ী মেরামত নয়, বরং নতুন সেতু নির্মাণই একমাত্র সমাধান। প্রসঙ্গত, আরামবাগের এই সেতু দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, হাওড়া সহ হুগলির বেশ কিছু জায়গাকে যুক্ত করেছে। তাই এই সেতুর সংস্কারের জন্যই দাবি জানাচ্ছে স্থানীয়রা।