সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: “মা তো সকলেরই মারা যায়, তা এর জন্য ছুটি নেওয়ার কি আছে?” না, এ কথা আমরা বলছি না, বরং দেশের প্রথম সারির এক ব্যাঙ্কের বসের বক্তব্য। সম্প্রতি ইউকো ব্যাঙ্কের (Uco Bank) এক কর্মকর্তার সঙ্গে বসের দুর্ব্যবহারের নমুনা এই ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে নেট নাগরিকরা ছি ছি করছে। মূলত ছুটি চাওয়াকে কেন্দ্র করেই বসের এ ধরণের কুরুচিকর মন্তব্য।
কর্মীদের উপরেই বসের দুর্ব্যবহার
আসলে ব্যাঙ্ক ম্যানেজমেন্টের ওই কর্মকর্তা সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে ঊর্ধ্বতনদের ব্যবহার খোলসা করেছেন। ইমেইলে অভিযোগকারী আরএস অজিতকে নিয়ে তিনি এক ভয়ংকর অভিযোগ করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, এই বস কাজের জায়গায় ভয় আর নিপীড়নের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। এমনকি কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি পেশাদারদের মতো নয়, বরং চাকর-বাকরের মতো আচরণ করা করেন।
মূলত ওই বস তাদের কর্মকর্তাদের কোনওভাবেই ছুটি মঞ্জুর করতে চান না। পারিবারিক সংকটের মধ্যেও তিনি ছুটি চাইলে কুরুচিকর মন্তব্য করে বসেন আর তাদের অপমান করেন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, কারোর মা মারা যাওয়ার পর ছুটি চাইতে গেলে তিনি বলেছেন, “সবারই তো মা মারা যায়, তাহলে এর জন্য ছুটির কি দরকার? বেশি নাটক করবেন না তো।”
Mother passed away? — “Everyone’s mother dies, don’t be dramatic.”
⁰Child in ICU? — “Are you a doctor? Either come to office or take LWP.”
⁰Wife hospitalized? — “You’re useless anyway.”Is this how a Zonal Head at @UCOBank is expected to treat his own officers?
This is not… pic.twitter.com/rGEWUEqpDl
— bankpediaa (@bankpediaa) September 28, 2025
অফিসে না আসলে বেতন ছাড়া ছুটি
শুধু মায়ের মৃত্যু নিয়ে নয়, বরং এক কর্মচারীর মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণে সে ওই বসের কাছে ছুটি চেয়েছিল। আর তাকে তিনি অপমান করে বলেন, “তুমি ওখানে থেকে কী করবে? তুমি কি ডাক্তার? অফিসে এসো, নাহলে বেতন ছাড়াই ছুটি নাও।” এমনকি আর একজন কর্মীর স্ত্রী হাসপাতলে ভর্তি থাকাতে তিনি ছুটি চেয়েছিলেন। তবে বস উত্তর দেন, “এমনিতেই তুমি অপদার্থ।” এরপর ছুটির আবেদন অবমাননার মন্তব্য করে খারিজ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘স্মার্টফোন নেব না!’ সরকারের শর্ত দেখেই বেঁকে বসলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা
ওই কর্মীর পোস্ট ভাইরাল হতেই নেট নাগরিকরা একের পর এক মন্তব্য প্রকাশ করছে। কেউ কেউ বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন বকবক করছেন? ঈশ্বরের আশীর্বাদে আপনার দুই হাত রয়েছে। যে কেউ কারোর মায়ের সম্বন্ধে এরকম কথা বললে মুখে নয়, বরং হাতে কথা বলতে হবে। কারণ, মৃত মাকে নিয়ে মজা করার অধিকার কারোর নেই। উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে যা ইচ্ছা তাই শুরু করেছে। এগুলির যোগ্য জবাব দেওয়া দরকার। এমনকি আরও একজন বলছেন, এটি বর্বর আচরণ। পুরো একনায়কতন্ত্র শাসন। কেউ সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রিনশট শেয়ার করে বিষয়টি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অর্থমন্ত্রককে মেনশন করে নজরে এনেছেন। এমনকি ইউকো ব্যাঙ্ক বা তাদের চেন্নাই জোনাল অফিস, কেউই এই অভিযোগের বিষয়ে কোনওরকম আনুষ্ঠানিক মন্তব্য প্রকাশ করেনি।