সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিয়ের জন্য সব আয়োজন হয়ে গিয়েছিল। লজ থেকে শুরু করে ক্যাটারিং, সবই বুক। তবে কেনাকাটা শেষ হওয়া সত্বেও শ্রীরামপুর (Shrirampur) থেকে মিলল যুবতীর নিথর দেহ। জানা যাচ্ছে, দু’দিন আগেই নিখোঁজ হয়ে যায় ওই যুবতী। চন্দননগরে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিল বলেই অভিযোগ। তারপর থেকেই পুলিশ খোঁজ চালাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ভাইফোঁটার দিন হুগলির শ্রীরামপুর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হল।
ঘটনাটি কী?
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, চন্দননগরের বউবাজার এলাকার বাসিন্দা মনামী ঘোষ। তাঁর বয়স ২৫ বছর। চন্দননগরের বাগবাজারে একটি সোনার দোকানে তিনি কাজ করতেন। কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার জেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই তরুণী। আর শেষ পর্যন্ত নদীতে ঝাঁপ দেন বলেই তাঁর পরিবারের অভিযোগ। এমনকি গত মঙ্গলবার চন্দননগর বাসস্ট্যান্ডে কিছুক্ষণ বসে ছিলেন। তারপর বারোটা নাগাদ তিনি গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। এমনকি এও জানা যায়, ঝাঁপ দেওয়ার আগে ওই যুবতী একটি চিঠি লিখে মোবাইল নিয়ে চাপা দিয়ে রেখে যায়। যেহেতু সে সাঁতার জানত না, তাই সঙ্গেই তলিয়ে যায়।
খবর পাওয়া মাত্রই বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী তল্লাশিতে নামে। স্পিড বোর্ড, ডুবুরি সবই নামানো হয়। তবে দু’দিন ধরে খোঁজ চালানো হলেও কোনও খবর মেলেনি। অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর গঙ্গার ঘাট থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রীরামপুর ওয়ারলেস হাসপাতালে বর্তমানে ওই মৃতদেহের ময়না তদন্ত চলছে। এমনকি চন্দননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর ওই সোনার দোকানের মালিকের স্ত্রী মমতা দাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের নেতাদের দ্বারা ৩৫০ কোটি টাকা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি, তদন্তের দাবি জানালেন শুভেন্দু
বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল ওই যুবতীর
রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, চন্দননগর বউবাজার শীতলতলার বাসিন্দা সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে ওই যুবতীর রেজিস্ট্রি বিয়ে আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। আগামী বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে হওয়ার কথা। তার জন্য লজ ভরা নেওয়া হয়ে গিয়েছিল, এমনকি ক্যাটারিংও বুক করা হয়েছিল। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তবে তার মধ্যেই পরিবারে এরকম শোকের ছায়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না গ্রামবাসীরা। তাঁর পরিবার অভিযোগ করছে, মনে হয় যে দোকানে কাজ করত, তাঁকে সেখান থেকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা হত। তাই সে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।