প্রীতি পোদ্দার, গোঘাট: ডিম খাওয়া নিয়ে অশান্তি! গোঘাটে জগদ্ধাত্রী পুজোর নিরঞ্জনের রাতেই বন্ধুর হাতে খুন হলেন আরেক বন্ধু (Young Man Died In Goghat)। অভিযোগ কামারপুকুরের লাহাবাজারে স্থানীয় এক ক্লাবে মাত্র তিনটি ডিম খেয়ে নেওয়া নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে বচসা শুরু হয়। সেই বচসা ধীরে ধীরে মারামারির আকার ধারণ করে। শেষে লাঠিপেটার জেরে অচৈতন্য হয়ে পড়লে যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক
ঠিক কী ঘটেছিল?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, রাতে দশমী উপলক্ষে গোঘাটে জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানের আয়োজন করা হয়েছিল। ধুমধাম করে গান বাজিয়ে সেখানে ভাসান হয় এবং তারপরেই খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই আনন্দ উৎসবের মাঝেই ঘটে যায় এক ভয়ংকর ঘটনা। বন্ধুর পাতের ডিম আরেক বন্ধু খেয়ে ফেলা নিয়ে চরম বচসা শুরু হয়। পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছয় যে সেই বন্ধুটিকে লাঠিপেটা করা হয়। আর তাতেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে যুবকটি। সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের লোকেরা তাঁকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির কামারপুকুরে, আর তা-ও আবার স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ১০০ মিটারের দূরত্বে। গোটা এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ক্রাচ ছিনিয়ে রামচন্দ্রের ঘাড়ে আঘাত!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতের নাম রামচন্দ্র ঘোষাল, বয়স ২৬ বছর। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রাজু মাইতি। অভিযোগ, মাত্র তিনটি ডিম খেয়ে ফেলায় রাজু মাইতি শারীরিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক ব্যক্তির ক্রাচ ছিনিয়ে রামচন্দ্রের ঘাড়ে আঘাত করেন। তারপর তাঁকে মারতে মারতে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় কামারপুকুরের শ্রীধাম প্রতীক্ষালয়ে। রামচন্দ্রের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। বাবা তারক ঘোষাল ক্ষোভে বলেন, “ক্লাবের ছেলেরা কিছুই করেনি, আমায় খবরও দেয়নি। মারা যাওয়ার পর এসে জানাচ্ছে! যারা আমার ছেলেকে মেরেছে, তাদের ফাঁসি হোক।” ঘটনার পর গোঘাট থানার পুলিশ রাজু মাইতিকে আটক করেছে এবং তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: অন্ধ্রপ্রদেশে কাজে গিয়ে বীরভূমের পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু! ১৮ বছর বয়সেই নিভল প্রদীপ
পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন
ঘটনার পর এলাকা জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। সকলের চোখে মুখে অবাক করা প্রশ্ন একটা ডিম নিয়ে এমন মৃত্যু! এটা ভাবতেও পারছি না। স্থানীয় পুলিশে নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা। কয়েক মাস আগেই যেখানে জেলা পুলিশ সুপার উদ্বোধন করেছিলেন ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য একাধিক সিসি ক্যামেরা, সেখানে দাঁড়িয়ে এইরূপ মর্মান্তিক ঘটনা সকলকে অবাক করে দিচ্ছে। অভিযুক্তের চরম শাস্তির দাবি করেছেন মৃতের পরিবার।












