প্রীতি পোদ্দার, সল্টলেক: এবার নিজের বাড়িতেই সরাসরি হামলার মুখে পড়লেন প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick Attacked)! গতকাল অর্থাৎ রবিবার সল্টলেকে এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি আচমকা হাবড়ার তৃণমূল বিধায়কের উপর হামলা চালিয়েছেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর পরিচয়। এমতাবস্থায় অভিযুক্তের পরিবার এই হামলা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরলেন।
হামলা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপর
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ রবিবার হাবড়া থেকে সল্টলেকের বাড়িতে এসেছিলেন প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। সেখানেই তাঁর একটি অফিসও রয়েছে। গতকাল হাবড়া থেকে এসে সেই অফিসে প্রবেশ করার সময় তাঁর উপর হামলা হয়। আচমকাই এক যুবক এসে তাঁর মুখে ঘুষি মারেন আর তাতেই ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান বালু। আক্রমনাত্মক এই কাণ্ডে হঠাৎ চিৎকার করতে থাকেন। সেই সময় কয়েক জন দলীয় ছুটে এসে যুবককে আটকান কিন্তু সে এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে তাঁকে তিন-চার জন মিলেও ঠেকাতে পারছিলেন না। শেষমেশ কোনও রকমে যুবককে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়েই বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এসে যুবককে গ্রেফতার করে।
প্রকাশ্যে এল সিসিটিভি ফুটেজও
পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম অভিষেক দাস ওরফে পাপাই। তিনি হাবড়ার জয়গাছির বাসিন্দা। বালুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিযুক্তকে চেনেন না। কখনও দেখেনওনি। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজও তিনি খতিয়ে দেখেছেন। তা থেকেই জানতে পেরেছেন যে, দুপুর ৩টে থেকে বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছিলেন ওই যুবক। মাঝে একবার উধাও হয়ে গেলেও কিছুক্ষণ পরেই আবার বাড়ির সামনে এসে হাজির হন। তার পর বালু সেখানে পৌঁছোতেই তাঁর উপর হামলা চালান। কিন্তু কী কারণে তিনি হামলা চালিয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবকের পরিবার এদিন মুখ খোলেন।
কে এই অভিষেক দাস?
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হামলাকারী অভিযুক্ত যুবক অভিষেক দাসের বাড়ির লোক গতকাল রাতেই ছেলের এই কাণ্ডের খবর পেয়ে তড়িঘড়ি পৌঁছয় বিধাননগর নর্থ থানায়। অভিষেকের বাবা জানান, তাঁদের থানা থেকে ফোন করে আসার জন্য বলা হয়েছে কিন্তু কাকে মেরেছে কেন মেরেছে এই বিষয়ে তাঁরা কিছু জানে না। অন্যদিকে পরিবারের বাকি সদস্যরা দাবি করেন, “রবিবার ভোর চারটে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ছেলে। এরপর সকাল আটটা নাগাদ জানায় সে দত্তপুকুরে আছে। বিকেলের দিকে ফোন করলে জানায় সে উল্টোডাঙায় আছি।” তাঁদের আরও দাবি অভিষেক নাকি মানসিক ভারসাম্যহীন, গত চার বছর ধরে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন: জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে নয়া মোড়! নদিয়ায় কাঠ মিস্ত্রীর বাড়িতে সকাল সকাল হানা ED-র
সুস্থ আছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
হাবড়ার বিধায়কের এই হামলায় রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। তবে এই প্রথম নয় এর আগেও হাবরার চেয়ারম্যান, হাবরার ভাইস চেয়ারম্যান-সহ একাধিক রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে আচমকা ঢোকার ইতিহাস রয়েছে অভিষেক দাসের। পাপাইয়ের বাবার এফসিআর গোডাউন রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খানিক আঘাত পেয়েছেন। তবে আপাতত তিনি সুস্থই রয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করানোর প্রয়োজন পড়েনি। ঘটনার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন , “দেখে মনে হল ছেলেটি নেশাগ্রস্থ ছিল। আগে থেকেই আমার বাড়িতে নজর রাখছিল। করছিল। এরপর আমি বাড়িতে ঢুকতেই হঠাৎ এসে আমার পেটে একটা ঘুষি মারে।”












