বেধড়ক মারধর, তারপরই অস্বাভাবিক মৃত্যু ছাত্রর! পুরুলিয়ায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা

Published:

Purulia Student Death
Follow

প্রীতি পোদ্দার, পুরুলিয়া: রবিবার রাতে স্কুলের হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিগত কয়েকদিন ধরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরুলিয়ার (Purulia Student Death) কেন্দা থানা এলাকায়। এদিকে গতকাল সকাল থেকে ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যেরা। এমতাবস্থায় নবম শ্রেণির ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হলেন সংশ্লিষ্ট বেসরকারি স্কুলের সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতো। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল নিহত ছাত্রকে মারধর করার। তাই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সাতসকালে তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দা থানার পুলিশ।

পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সন্দেহ পরিবারের

স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরুলিয়ার কেন্দা থানা এলাকার রামকৃষ্ণ সারদা মন্দির নামে ওই স্কুলের হস্টেলের ১২ নম্বর ঘর থেকে গত রবিবার রাতে শম্ভু কুম্ভকার নামে এক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে যে সে আত্মহত্যা করেছে। এদিকে পরিবারের দাবি, রবিবার রাত ৯টার সময় শম্ভুর দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কেউই সেই খবর পরিবারকে জানায়নি। গতকাল, সোমবার সকালে খবর পেয়ে ওই স্কুলে যান মৃতের পরিবারের লোকেরা। স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখালে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় কেন্দা থানার পুলিশ। কথা বলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে। উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়।

অভিযোগ তুললেন নিহতের মা

নিহতের মা ছেলের মৃত্যু নিয়ে এদিন মিডিয়ার সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলের বন্ধুদের মুখে শুনলাম, শম্ভুকে নাকি শনিবার স্কুলের এক শিক্ষক খুব মেরেছে। সেই কারণেই রবিবার অন্য পড়ুয়ারা ওঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। তারপর দেখে এই কাণ্ড।’ স্কুলের অন্য পড়ুয়ারা আবার অভিযোগ তুলেছে এই স্কুল সম্পাদকের বিরুদ্ধে। শনিবার নিহত ছাত্রকে তিনি মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ একাংশের পড়ুয়াদের। এদিকে ওই স্কুলের সম্পাদক হলেন তৃণমূল নেতা জগন্নাথ মাহাতো, যিনি কিনা একজন তৃণমূল নেতা। যার ফলে নাবালক মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে বেশ পারদ চড়ে এলাকায়। এদিকে সম্পাদক ও তাঁর ভাইয়ের গ্রেফতারির দাবিতে পুরুলিয়া-মানবাজার রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা।

গ্রেফতার তৃণমূল নেতা

পুরুলিয়ায় ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল অর্থাৎ সোমবার, টানা ৯ ঘণ্টা ধরে পথ অবরোধ করে চলে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন। তাঁদের মূল দাবি ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হোক এবং অভিযুক্ত সম্পাদককে গ্রেফতার করা হোক। এরপর আন্দোলনকারীদের দাবি মেনেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জগন্নাথ মাহাতো ও তাঁর ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্তের ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেয় কেন্দা থানার পুলিশ। তবে শুধু জগন্নাথ মাহাতো নয়, এর সঙ্গে ওই বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নারায়ণ মাহাতো, সহ-প্রধান শিক্ষক গুণধর মাহাতো ও শিক্ষক বিদ্যুৎ মাহাতোর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন: SIR ফিরিয়ে দিল স্বামীকে! ৩৫ বছর ধরে নিখোঁজ মুর্শিদাবাদের করিম শেখ হঠাৎ বাড়িতে

উল্লেখ্য, পুরুলিয়ায় নবম শ্রেণীর ছাত্রের এইরূপ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বিদ্যালয় এবং হোস্টেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যেহেতু এর সঙ্গে শাসকদলের নেতাও জড়িত, তাই প্রতিবাদস্বরূপ গর্জে উঠেছে বিজেপি সিপিআইএম। বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদিকা ময়না মুর্মু বলেন, ‘এই রাজ্যে ছেলেমেয়েরা সুরক্ষিত নয়। পুলিশ মামলা ঘোরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আত্মহত্যা বলে দায় ঠেলে দিচ্ছে। আমরা চাই এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হোক।” অন্যদিকে বামনেতারা অভিযোগ করে জানিয়েছেন যে, ‘এটা কোনও স্কুল ছিল না। এখানে মদের আসর বসত। ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হোক।”

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join