প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ শিল্প ব্যবস্থা নিয়ে বারংবার একাধিক প্রশ্ন ওঠে। শাসকদলকে বারংবার শুনতে হয় আদেও কি পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের কোনো ভবিষ্যৎ আছে কিনা, কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পসত্তার বিপুল পরিবর্তন হয়েছে। রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ ব্যবস্থা আর পাঁচটা উন্নত রাজ্যের মতই নিজের নাম কিনেছে। এমনকি শিল্প নিয়ে একের পর এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে সরকার। এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়নকে গতি দিতে ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলায় দুই শিল্প সংস্থাকে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আয়োজিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হল।
২ সংস্থাকে জমি প্রদান সরকারের
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ সোমবার, নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে শিল্প সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগের হাওয়া জোরদার হচ্ছে। শিল্পপতিরা ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে, এমন আবহে রাজ্যের শিল্প ভবিষ্যৎ এর কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২ সংস্থাকে জমি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সরকারি নথি অনুযায়ী, ঝাড়গ্রামের দু’টি মৌজায় সুকনিবাসা ও ঘাগরাশোল এলাকায় পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম অর্থাৎ WBIDC-র অধীনে থাকা মোট ১৪৯.৬৪ একর জমি দু’টি শিল্প সংস্থাকে “ফ্রি হোল্ড বেসিসে” দেওয়া হচ্ছে। যে দু’টি সংস্থা জমি পাচ্ছে, তারা হল ক্যাপ্টেন ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং আল্ট্রাটেক সিমেন্ট লিমিটেড।
কী বলছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী?
জমি দেওয়া প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, তারই অঙ্গ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। যদিও সমস্ত নিয়ম মেনেই জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঝাড়গ্রামে বড় মাপের বিনিয়োগ আসবে এবং প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।” প্রশাসনিক এক আধিকারিকের মতে, জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে দু’টি সংস্থা দ্রুত প্রকল্প শুরু করবে। এতে ঝাড়গ্রাম অঞ্চলে শিল্পভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ১৩,১৫৬ কোটি! ১ কোটি মানুষকে পরিষেবা, স্বাস্থ্যস্বাথী প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা মমতার
উল্লেখ্য, এদিন শিল্প বিনিয়োগের পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাংস্কৃতিক দিক নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেহেতু সামনেই ‘বন্দে মাতরম্’ রচনার ১৫০ বছর পূর্তি, তাই রাজ্যজুড়ে সেটি উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি সেলিব্রেশন কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, ভাইস চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্য উপদেষ্টা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে নিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও আবুল বাশার, গৌতম ঘোষ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ ভৌমিক, সুবোধ সরকার, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শুভাপ্রসন্ন, সত্যম রায় চৌধুরী, দেব, সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্ব মজুমদার এবং দেবাশিস ভট্টাচার্য সদস্য হিসেবে রয়েছেন।












