সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ অবশেষে সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুরু হল ‘কর্ণগড়’-এর (Karnagarh) সংস্কারের কাজ। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। এই কর্ণগড় কত যে ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে তার ঠিক নেই। কিন্তু ইতিহাস বিজড়িত এই জায়গার শ্রীহীন অবস্থা দেখলে আপনারও মন খারাপ হয়ে যাবে। এই জায়গা যাতে নতুন করে সুন্দর হয়ে ওঠে এবং হেরিটেজের তকমা পায়, সে জন্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বিক্ষোভ, আন্দোলন। তবে আর চিন্তা নেই, এর কারণ পশ্চিমবঙ্গ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উদ্যোগে ‘কর্ণগড়’-এর সংস্কারের কাজ জোরকদমে শুরু হল।
শুরু হল ‘কর্ণগড়’-এর সংস্কারের কাজ
‘কর্ণগড়’-এর সংস্কারের কাজের জন্য সরকারের জন্য সরকারের তরফে আড়াই কোটি টাকা অবধি বরাদ্দ করা হয়েছে। এই সেই কর্ণগড় যেটি কিনা রানী শিরোমণির (Rani Shiromani) গড় নামেও পরিচিত। ব্রিটিশ ভারতের সম্ভবত প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী রানী শিরোমণি। পারাং নদী ঘেরা প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ- গড়, তাঁর নামেই ‘রানি শিরোমণি গড়’। কর্ণগড়ের দু’টি মন্দির- মহামায়া ও দণ্ডকেশ্বর আগেই পেয়েছিল রাজ্য সংরক্ষিত সৌধের মর্যাদা।
বর্তমানে বহু ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। জানা গিয়েছে, রানীর প্রাসাদ, হাওয়া মহল তথা জলহরি, আটচালা রীতির মন্দির, শিবমন্দির থেকে শুরু করে অন্যান্য ধ্বংসাবশেষগুলি সংস্কার করা হচ্ছে। এদিকে রাজ্য সরকার তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কর্ণগড় সংরক্ষণ নিয়ে আন্দোলন করা ভালোবাসি কর্ণগড়, হেরিটেজ জার্নি, রানী শিরোমণির ঐক্যমঞ্চের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি।
খরচ হবে আড়াই কোটি টাকা!
আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে হেরিটেজ সম্মান রক্ষা ও গড় সংরক্ষণে কর্ণগড়কে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে আগের থেকে এলাকাকে ঘিরে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। জায়গাটিকে পর্যটনকেন্দ্র রূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। আগের থেকে এখানে পর্যটকদের সংখ্যাও বেড়েছে। তবে এই সংস্কারের কাজ পুরোপুরি হয়ে গেলে সাধারণ পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে শালবনীর বিডিও রেমান মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘প্রায় আড়াই কোটি টাকার টেণ্ডার হয়েছিল। সেই কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদার সংস্থাকে তিনশো দিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। আশা করা যায় সময়ের মধ্যেই তা শেষ হবে।’
কে ছিলেন রানী শিরোমণি?
নিশ্চয়ই ভাবছেন কে ছিলেন এই রানী শিরোমণি? তাহলে জানিয়ে রাখি, ঐতিহাসিক চুয়াড় বিদ্রোহের প্রধান নেত্রী ছিলেন রানী শিরোমণি। কৃষক বিদ্রোহকে সামনে রেখে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। রাজকোষ থেকে অর্থ খরচের পাশাপাশি লোকবল দিয়েও সাহায্য করেছিলেন।












