সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বাংলাজুড়ে চলছে এসআইআর (SIR In Bengal)। মঙ্গলবার থেকে বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফর্ম বিলি শুরু করেছেন বুথ লেভেল আধিকারিকরা। তবে শোনা গিয়েছিল, বিএলও-র কাছ থেকে নিজেই এনুমারেশন ফর্ম নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর এ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর শোরগোল। তবে ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই আসল সত্যি সামনে আনলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বিএলও?
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের হরিশ মুখার্জী রোডে ফর্ম নিয়ে হাজির হন বিএলও অমিতকুমার রায়। তাঁর দায়িত্ব ছিল হরিশ মুখার্জী স্ট্রিট অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন। তবে সেখানে ঢুকতেই তাঁর পথ আটকায় পুলিশ। জানতে চাওয়া হয়, তিনি কোথায় যাচ্ছেন। তবে বিএলও সবকিছু জানানোর পরও তাঁকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এরপরে খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে থাকা কর্তব্যরত পুলিশের কাছে। সেখান থেকে নির্দেশ আসে যে, বিএলও-কে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে বাড়ির সামনে পৌঁছতে ফের আবার আটকানো হয়। এরপর অমিতকুমার রায়কে বলা হয় যে, এনুমারেশন ফর্ম দরজার বাইরে থেকে পুলিশের হাতে দিয়েই চলে যেতে। কিন্তু বিএলও জানান যে, নিয়ম অনুযায়ী ভোটারের হাতেই ফর্ম তুলে দিতে হবে। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখানো হলেও তিনি কমিশনের নিয়ম মেনে কাজ করবেন। পাশাপাশি তিনি এও জানান যে, মুখ্যমন্ত্রী হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর লোকসভা কেন্দ্রের একজন ভোটার। তাই তাঁকে ফর্ম নিতেই হবে।
নিজেই এনুমারেশন ফর্ম নিলেন মমতা?
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, নাছোড়বান্দা বিএলও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ছাড়া আর কাউকে ফর্ম দেবেন না বলেই জানান। এমনকি পুলিশের সঙ্গে তাঁর বাক্য বিনিময় হয়। এরপর তাঁর যুক্তি শুনে পুলিশ কর্মীরা ভিতরে গিয়ে জানান যে, বিএলও ভিতরে যেতে পারেন। তবে তাঁর মোবাইল ও ব্যাগ নিরাপত্তার কারণে বাসভবনের বাইরে জমা রাখতে হবে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বিএলও-এর হাত থেকে এনুমারেশন ফর্ম নেন। জানা যাচ্ছে, তিনি হরিশ মুখার্জী রোডের মিত্র ইনস্টিটিউশন ভোটকেন্দ্রের ৭৭ নম্বর বুথের একজন ভোটার। দাবি করা হচ্ছে, তিনি পরিবারের সদস্যদের জন্য মোট ১৭টি এনুমারেশন ফর্ম নিয়েছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী অমিতকুমার রায়কে জানান যে, ফর্ম ফিলাপ হয়ে গেলে দপ্তরে ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হবে। এর পরেই বাসভবন থেকে ফিরে আসেন বিএলও।
আরও পড়ুনঃ বাগডোগরায় সেনা ছাউনিতে গুপ্তচর? আইডি দেখাতেই ধৃত বাংলাদেশি! ছিল আধার কার্ডও
দাবি উড়িয়ে দিলেন খোদ মমতা
তবে আজ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পোস্ট করে জানিয়েছেন যে, গতকাল দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলও আমাদের পাড়ায় এসেছিল তাঁর কাজ করতে। কর্মসূত্রে আমার রেসিডেন্স অফিসে এসে আমাদের হাতে ফর্ম দিয়ে গেছেন। তবে যতক্ষণ না বাংলার প্রতিটি মানুষ এই এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করছে, আমি নিজে কোনও ফর্ম পূরণ করিনি, আর করবও না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করছে যে, আমি বাসভবন থেকে বেরিয়ে এসেই নিজের হাতে বিএলও-এর কাছ থেকে এনুমারেশন ফর্ম গ্রহণ করেছি। এই খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার।












