প্রীতি পোদ্দার, বীরভূম: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে টার্গেট করে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রস্তুতির উৎসব। আর এই আবহে ফের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের অভিযোগে উঠল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসে। সম্প্রতি জমিতে ছাগল চড়ানো নিয়ে গোষ্ঠী সংঘর্ষের মাঝে মৃত্যু এক তৃণমূল কর্মীর (TMC Worker Murdered)। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের লাভপুরে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি এলাকা জুড়ে। বসানো হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প।
ঠিক কী ঘটেছে?
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বুধবার সকালে বীরভূমের লাভপুরের কুসুমগরিয়া গ্রামে ছাগল চড়ানো নিয়ে তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ বাঁধে। শুরুতে বচসা বাঁধলেও পরে দু’পক্ষই লাঠি, বাঁশ, লোহার রড দিয়ে একে অপরের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বেশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। অভিযোগ পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশের সামনেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলে মারামারি। যার ফলে পরে আরও বিশাল পুলিশ বাহিনী ওই গ্রামে এসে পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা হয় পরিস্থিতি।
মৃত্যু এক তৃণমূল কর্মীর
বীরভূমের লাভপুরের ছাগল চড়ানোর সংঘর্ষে মোট ৬ জন জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁদের। এদিকে সংঘর্ষের ফলে গত শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয় ৬৫ বছরের আবদুল রহমান মল্লিক নামে এক তৃণমূল কর্মীর। যার ফলে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। ইতিমধ্যেই গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। এমনকি বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রিকি আগরওয়ালের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী রুটমার্চ করেছে গ্রামে। যদিও এই ঘটনাকে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব হিসেবে মানতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ। তিনি বলেন, ‘গ্রামে ছাগলে ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করেই দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ বেঁধেছিল। দল এর সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নয়।’
আরও পড়ুন: লোপাট হওয়া ৫৬ লক্ষ টাকা কল্যাণের অ্যাকাউন্টে ফেরাল SBI
উল্লেখ্য, বীরভূমে তৃণমূলের এই গোষ্ঠী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা অভিযোগ জানাচ্ছে যে বেশ কিছুদিন ধরেই পঞ্চায়েতের টেন্ডার বণ্টন ও গ্রাম্য আধিপত্যকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকত, চাপা রাগ জমেছিল দুই দলের মধ্যে, অবশেষে গত বুধবার জমিতে ছাগল চড়ানো, ধান খাওয়ার ঘটনায় তারই বহিঃপ্রকাশ হল। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তৃণমূলের এই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নতুন কোনো কিছু নয়, এর আগে অনেক জায়গায় এই ধরণের ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিরোধীরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি।












