প্রীতি পোদ্দার, মেঘালয়: সাহিত্যের জগতে অনেক সময়ই মেঘ বালিকার প্রসঙ্গ উঠে আসে। মেঘের ভেলায় চড়ে সেই মেঘবালিকা ভেসে বেড়ায় আকাশে বাতাসে। খিলখিলিয়ে ছুটে চলে যায় মাঠ-ঘাট দিয়ে। যদিও সবটাই কাল্পনিক মনে হলেও একটি জায়গায় সত্যি সত্যিই এমন দৃশ্য দেখা যায়। আর সেটি হল মেঘালয়। যেখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হল উমঙ্গট নদী (Umngot River)। কাচের জলের মত পরিষ্কার বলে বরাবরই পরিচিত এই নদী। কিন্তু এবার সেই নদীর জলই নাকি ঘোলা হতে চলেছে।
কাঁচের মত স্বচ্ছ জল উমঙ্গট নদীতে
মেঘালয়ের পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় জেলায় অবস্থিত ছোট্টো পরিচ্ছন্ন এবং তকতকে শহর হল ডাউকি। এখানে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রামের পরিবেশ যেন সবসময়ই মনোরম থাকে। আর সেখানেই এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মাওলিনং এবং উমঙ্গট নদী অবস্থিত। এই নদীতে নৌকাবিহার করেই সারাটা দিন কাটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এই নদীর আরেক নাম ডাউকি নদী। স্বচ্ছ কাঁচের মতো এই নদীর জল দেখলে নদী ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না। তাইতো সেই আকর্ষণে পর্যটকেরা বারবার ছুটে আসে এইখানে। কিন্তু এ বার সেই নদীর জল ঘোলা হয়ে গিয়েছে। আর তাতেই চিন্তায় পড়েছে পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ।
কেন ঘোলাটে হচ্ছে জল?
স্থানীয়দের তরফে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর বর্ষাকালে উমঙ্গট নদীর জল ঘোলাটে থাকে। কিন্তু সেই জল অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ফের পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু এ বার তা হয়নি। দ্য পিপলস পার্টির দাবি, শিলং-ডাওকি করিডরের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে যে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে NHIDCL, তার জন্যই উমঙ্গট নদীর জল ঘোলাটে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সংগঠনের সাংসদ রিকি সিংকন কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গডকরী এবং পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে চিঠি লিখে তাঁদের হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন। রিজি সিংকনের দাবি একের পর এক প্রকল্পের অধীনে পাহাড় কাটার সময় মাটি, বালি ইত্যাদি নদীতে ফেলার জেরেই এমনটা ঘটছে বলে। কিন্তু এখনো প্রকাশ্যে আসেনি এই নদীর জল ঘোলাটে হওয়ার আসল কারণ।
আরও পড়ুন: অষ্টম পে কমিশনে বাদ ৬৯ লাখ পেনশনভোগী! মাথায় বাজ অবসরপ্রাপ্তদের
উমঙ্গট নদীর এই পরিস্থিতি নিয়ে NHIDCL-এর এক ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, উমঙ্গট নদীর উপর একটি ১০০ মিটার উঁচু এবং ৪০০ মিটার লম্বা সেতু নির্মাণের কাজ চলছে যা বেশ জটিল। তবুও যতটা সম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করেই নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে। তবুও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এমতাবস্থায় পর্যটনের মরসুমে উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্য সরকারের।












