মেয়ের স্বপ্নের স্কুটি কিনতে ৩ বছর ধরে তিলে তিলে জমান পয়সা, খুচরো নিয়ে শোরুমে গেলেন বাবা

Published:

Chandrakona
Follow

প্রীতি পোদ্দার, চন্দ্রকোণা: তিনবছর আগে ছোট মেয়ে বাবার কাছে আবদার করে স্কুটি চেয়েছিল। কিন্তু সেই কথা তখন রাখতে পারেননি বাবা। মনে কষ্ট হলেও প্রতিজ্ঞা করেছিলেন শখ পূরণ করবেন তিনি। এরপর রোজগার থেকেই তিল তিল করে খুচরো টাকা জমাতে শুরু করেন। শেষপর্যন্ত সেই জমানো খুচরো দিয়েই মেয়েকে স্কুটার কিনে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার (Chandrakona) বাসিন্দা বাচ্চু চৌধুরী। যা ইতিমধ্যেই বেশ ভাইরাল।

মেয়েকে স্কুটি কিনে দিতেই জমিয়েছিলেন টাকা

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার এক নম্বর ব্লকের মৌলা গ্রামের বাসিন্দা হলেন বাচ্চু চৌধুরী। তাঁর গ্রামেই একটি চায়ের দোকান আছে। আর সেই দোকানই তাঁদের পরিবারের একমাত্র সম্বল। সন্তানদের খাওয়া এবং পড়াশোনার খরচ সবই এই দোকান থেকে উঠে আসে। তবে যেহেতু আয়ের পরিমাণ কম বাচ্চু বাবুর তাই ছেলে মেয়েদের শখ আহ্লাদ মেটাতে খুব বেশি পারেননি তিনি। বছর তিনেক আগে তাঁর ছোট মেয়ে সুষমা বাবার কাছে একটি স্কুটির আবদার করেছিল। কিন্তু সেসময় মেয়ের শখ পূরণ করতে পারেননি বাচ্চু। তবে মনে মনে সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন মেয়েকে স্কুটি কিনে দেবেনই। তাই সেই কারণে একটি ঘটে খুচরো টাকা জমাতে শুরু করেছিলেন তিনি। আর তাতেই এবার এক বড় কাণ্ড ঘটল।

খুচরো টাকা দিয়ে কিনলেন স্কুটি

ভিডিও সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ রবিবার সকালে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এলাকারই এক স্কুটি-বাইকের শোরুমে গিয়েছিলেন বাচ্চু চৌধুরী। সেই দোকানের মালিক অরিন্দম পালকে খুচরো টাকায় স্কুটি কেনার কথা জানানো হয়। মালিক আপত্তি না করায় এরপরই শোরুমের বাইরে গিয়ে মেয়ে ও বাবা দু’জনে মিলে একটি বড়সড় জার নিয়ে ভিতরে ঢোকেন। শোরুমের মেঝেতেই ওই জার উপুড় করলে দেখা যায় গুচ্ছ গুচ্ছ ১০ টাকার কয়েন। স্কুটির দাম ছিল ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। মোট ৬৯ হাজার টাকার ১০ টাকার কয়েন রয়েছে বলে জানা যায়। বাকি টাকা নোটে দেওয়া হয়। আর সেই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনদের চোখে জল চলে আসে। জানা গিয়েছে, এর আগেও বাচ্চু চৌধুরী বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। সেসময়ও তিনি এভাবেই খুচরো জমিয়েছিলেন বলে খবর।

আরও পড়ুন: এ কী পরিণতি! কাঁচের মত স্বচ্ছ মেঘালয়ের উমঙ্গট নদীতে ঘোলা জল! উদ্বেগ পরিবেশ প্রেমীদের

স্থানীয়দের দাবি, খুচরো জমানো বাচ্চু চৌধুরীর অনেক দিনের অভ্যাস। এদিকে প্রথমবার খুচরো দিয়ে স্কুটি কেনা নিয়ে শোরুমের মালিক অরিন্দম পাল বলেন, “প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি। পরে দেখি এত কয়েন।” ছোট মেয়ের শখ স্কুটি কিনে দিতে পেরে খুব খুশি বাচ্চু। তিনি বলেন, “তখন দিতে পারিনি। আজ পূর্ণ করলাম।” কষ্ট করে বাবার সঞ্চয় এইভাবে মেয়ের আহ্লাদ পূরণ করেছে দেখে নেটিজেনদের মনে গভীর একটি দাগ ফেলেছে। এলাকার লোকজন ঘটনার কথা জানতে পেরে বিস্মিত এবং আপ্লুত।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join