সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাজধানীতে দিনের পর দিন বায়ুদূষণের মাত্রা রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। আর সেই কথা ভেবেই শনিবার মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা ঘোষণা করেছেন যে, দিল্লি সরকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ (Free LPG Connection) দেবে। হ্যাঁ, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে।
উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ
বলাবাহুল্য, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্প চালু হয়েছিল। যার মূল লক্ষ্য হল দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের প্রথম রিফিল, রেগুলেটর ও ওভেনের জন্য কোনও অর্থ বায় না করেই এলপিজি সংযোগ দেওয়া। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি আরবান শেল্টার ইমপ্রুভমেন্ট বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে যে, সমস্ত বস্তি এলাকার রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে এবং এমন পরিবারগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে যারা এখনও পর্যন্ত কাঠের উনুন বা কয়লাচালিত হিটার ব্যবহার করে রান্নাবান্না করে।
এদিকে সেই জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতেই সরকার জ্বালানির উপর নির্ভরশীল পরিবারের একটি তালিকা তৈরি করবে। পাশাপাশি উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের আওতায় তাদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সংযোগ দেওয়া হবে। ফলে রাজধানীর বায়ুদূষণের পরিমাণ যে অনেকটাই কমবে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
উল্লেখ্য, ৮ নভেম্বর দিল্লি সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলির খড় পোড়ানোর ফলে PM2.5 এর পরিমাণ পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় ৮.৬৪%-এ। আর রবিবার তা ৩২.৩%-এ পৌঁছনোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। এমনকি গত ৯ তারিখ থেকে আগামী ১১ তারিখ পর্যন্ত বাতাসের মান সবথেকে খারাপ অবস্থায় থাকতে পারে বলেই রিপোর্ট। আর পরবর্তী ৬ দিনও বাতাস খুব একটা ভালো থাকবে, তা বলা যাচ্ছে না।
দিনের পর দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের বুলেটিন অনুযায়ী, শনিবার বিকেল চারটেই দিল্লির ২৪ ঘন্টার গড় বায়ুমন্ডলের সূচক বা AQI ছিল ৩৬১, যা বিগত দিন ৩২২ এর থেকেও বেশি। ফলে বায়ুদূষণ রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। জানিয়ে রাখি, সিপিসিবি অনুযায়ী ৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে AQI সন্তোষজনক, ১০১ থেকে ২০০ কে মাঝারি বলা হয়, ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত খারাপ, ৩০১ থেকে ৪০০ খুবই খারাপ, আর ৪০১ থেকে ৫০০ কে গুরুতর বায়ুদূষণ বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ মদের দাম বাড়ানোর পথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার! ডিসেম্বর থেকে নতুন রেট
এটিকে দিল্লি এনসিআর ও ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমির অনেক অংশে বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়ার ফলে আবহাওয়াগত পরিবর্তনও আসছে। পাশাপাশি তাপমাত্রাও হ্রাস পাচ্ছে। মূলত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে খড় পোড়ানো ও অতিরিক্ত আতশবাজি ফাটানোর ফলেই এই দূষণের পরিমাণ বেড়েছে। এদিকে দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রক কমিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ধুলো কমানোর মেশিন দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করা হবে এবং রাস্তায় জল ছিটানোর কাজও জোরদার করা হচ্ছ। তারই অংশ হিসেবে কাঠের উনুন বা কয়লাচালিত হিটার বন্ধ করতে এবার দিল্লি সরকারের তরফ থেকে বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
