প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যজুড়ে জোড় কদমে চলছে ভোট প্রচারে প্রস্তুতি, কারণ বছর ঘুরলেই শুরু হতে চলেছে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু তার আগে ভুয়ো ভোটার হটাতে উঠে পড়ে লেগেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তাই শুরু হয়েছে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এর মাঝেই ফের CAA নিয়ে শুরু হল আরেক জট। CAA নিয়ে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
CAA নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA নিয়ে সম্প্রতি আত্মদীপ সংগঠন একটি মামলা দায়ের করে হাইকোর্টে। আজ সোমবার এই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী এবং হাজির ছিলেন রাজ্যের আইনজীবীও। মামলাকারীদের আইনজীবী মৈনাক বসু আদালতে দাঁড়িয়ে জানান, “জনস্বার্থ মামলায় সকলের কথা বলা হয়েছে। দেশ জুড়ে অন্তত ৫০ হাজার আবেদন পাঠানো হয়েছে। এদিকে SIR-এর এনুমারেশন ফর্মে তাঁদের জন্য কোনও বিকল্প রাখাই হয়নি। যে আবেদনগুলি পড়ে আছে সেগুলির ভবিষ্যৎ কী? কেন্দ্র হয় বিবেচনা করুক, নইলে বাতিল।”
১০ দিনের মধ্যে বিবেচনার নির্দেশ কেন্দ্রের
মামলাকারীদের দাবি করা CAA মামলায় এদিন হাইকোর্টে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান, “রাজ্য আমাদের কাছে কিছু পাঠায়নি। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে রাজ্যকে আবেদন পাঠাতে হয়, কিন্তু এখানে তা হয়নি।” পাল্টা জবাব দেয় রাজ্যের আইনজীবী। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এই বিষয়ে রাজ্যের কোনও ভূমিকা নেই, কারণ নাগরিকত্ব সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করছে কেন্দ্রীয় কমিশন। তারা শুধুমাত্র প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করছে, কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দায়িত্ব থাকবে কেন্দ্রের। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব জানান, “ আগামী ১০ দিনের মধ্যে এটা বিবেচনা করা হবে। যারা এই মামলার সঙ্গে যুক্ত তাদের দিকটা খতিয়ে দেখা হবে। দেশের অন্যত্র যেখানে এই ধরনের মামলা বিচারাধীন, তাঁদের জন্য প্রযোজ্য নয়।” এরপর এদিন দুপুরে ফের শুনানি নির্দেশ দেওয়া হয় এই মামলার।
আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলায় কেন্দ্রের দেওয়া ১৩৪৭ কোটি হস্তান্তর! রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শুভেন্দু
মামলা খারিজ হাইকোর্টের
নির্দেশিত ঘোষণা অনুযায়ী আজ দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে CAA নিয়ে ফের শুরু হয় শুনানির মামলা। এরপর সবদিক খতিয়ে দেখে এই মামলাটি সম্পূর্ণ খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, নাগরিকত্বের আবেদন করা মানেই কোনো অধিকার জন্মায় না। যাঁরা নাগরিকত্বের আবেদন জানিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকের বিষয়বস্তু আলাদা। ফলে জনস্বার্থ মামলায় তার বিচার করা কখনই সম্ভব নয়। যাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা চাইলে আলাদা করে সমাধান খুঁজতেই পারেন। অর্থাৎ কেন্দ্র আশ্বাস দিলেও CAA মামলা সম্পূর্ণ হাই কোর্টে খারিজ করে দেয় বিচারপতি।












