প্রীতি পোদ্দার, দিসপুর: কোটা বাতিলের দাবি থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি প্রথম থেকেই উত্তপ্ত হতে শুরু করে ৷ আগস্ট মাসে হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে আসার পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি৷ বরং উত্তরোত্তর বাড়ছে ৷ সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ও সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ইস্যুতে ফের জ্বলছে বাংলাদেশ ৷ কাঠগড়ায় সেদেশের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়। এমনকি বাংলাদেশের এই অশান্ত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির আঁচ ভারতেও জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যদিকে দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করায় ত্রিপুরার পর এবার অসমে জ্বলে উঠল প্রতিশোধের আগুন।
বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করল অসমের ব্যবসায়ীরা
আসলে ভারতের উত্তর-পূর্বাংশে ১৩টি স্থলবন্দর এবং চারটি জলবন্দর রয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য চালানো হয়। শ্রীভূমিতে অবস্থিত সুতরখান্ডি সেগুলির মধ্যে অন্যতম। এই স্থলবন্দর দিয়েই উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে বাংলাদেশে কয়লা, পাথর, চুনাপাথর, আদা, পেঁয়াজ, চাল, শুকনো লঙ্কা এবং বিভিন্ন ধরনের ফল রফতানি করা হয়। আর তার পরিবর্তে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হয় – কাঠের তৈরি আসবাব, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের তৈরি সামগ্রী, সিমেন্ট, জিআই শিট, ওয়েস্ট কটন, লোহার রড, মাছ, আচার, সফট ড্রিঙ্কস, বিস্কুট এবং কিছু অন্যান্য খাদ্য পণ্য। কিন্তু ভারতীয় পতাকা অপমান করার কারণে এবার ত্রিপুরার পর বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করল অসমের ব্যবসায়ীদের একাংশ।
কী কারণে এই সিদ্ধান্ত?
এই প্রসঙ্গে করিমগঞ্জ জেলা রফতানি-আমদানি কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে অমরেশ রায় জানান, “ওঁরা কোনও কারণ ছাড়াই ভারতের নামে অজস্র নোংরা কথা বলছেন। ভারতকে অভিযুক্ত করছেন। কিন্তু, সম্প্রতি আমরা দেখলাম, ওঁরা ভারতের জাতীয় পতাকার পর্যন্ত অমর্যাদা করলেন! এটা আমরা কিছুতেই সহ্য করব না। আমাদের কাছে দেশ সবার আগে। এবং আমরা এই ধরনের কোনও দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখতে চাই না।”
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “শ্রীভূমিতে অসংখ্য ব্যবসায়ী সংগঠন রয়েছে। আর সেই সমস্ত সংগঠনের যৌথ প্রতিনিধিত্ব করে কো-অর্ডিনেশন কমিটি। তাই আমরা সকলে সমবেতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা স্থির করেছি, যত দিন পর্যন্ত না বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, আগের অবস্থায় ফিরছে, তত দিন আমরা ওদের সঙ্গে কোনও বাণিজ্যিক লেনদেন করব না।”
অন্যদিকে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহাকুমার ভারত বাংলাদেশ ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে বন্ধের মুখে আমদানি রফতানি। আগে যেখানে প্রতিদিন ৪০০ পণ্যবাহী ট্রাক যেত বর্তমান সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১০০ তে। প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। আগে ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর বা অন্য কোনও স্থলবন্দরে ভারতীয় টাকায় যে পরিমাণ বাংলাদেশের অর্থ পাওয়া যেত এখন সে পরিমাণ আর পাওয়া যায় না। এর ফলে যে সমস্ত বাংলাদেশি ভারতে আসে ডাক্তার বা এমার্জেন্সি ভিসাতে তাঁরা চরম বিপাকে পড়ছে।