ভারতের যখনই প্রথম সারির ধনকুবেরদের প্রসঙ্গ ওঠে তখন কয়েকজনের নাম আমাদের মাথায় ঘোরাফেরা করে। সেই ধনকুবের ব্যবসায়ীদের নাম হল মুকেশ আম্বানি, রতন টাটা, গৌতম আদানি প্রমুখ। এখন গোটা বিশ্ব তাঁদের বিলিয়নে টাকা অর্জনকারী ব্যবসায়ী হিসেবে চেনেন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে এদের মধ্যে কেরিয়ারের প্রথম দিকে কে কী কাজ করতেন? তাহলে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
ধীরুভাই আম্বানির প্রথম চাকরি
আজ এই প্রতিবেদনে আলোচনা হবে ধীরুভাই আম্বানি থেকে শুরু করে রতন টাটা, গৌতম আদানি, কিরণ মজুমদার শ, সুধা মূর্তি, ইন্দ্র নুয়ি, আরদেশির গোদরেজকে নিয়ে। প্রথমেই আসা যাক Reliance Group-এর প্রাক্তন হর্তা কর্তা ধীরুভাই আম্বানিকে নিয়ে। ভারতের সবথেকে ধনী ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানির বাবা ধীরুভাই আম্বানি কেরিয়ারের প্রথম দিকে একটি পেট্রোল পাম্পে ৩০০ টাকা মাস মাইনের কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ইয়েমেনভিত্তিক ওই পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজার পদে উন্নীত হন। ২০১৬ সালে তিনি পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হন। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজে বর্তমানে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন লোক কাজ করছে, এটি দেশের বৃহত্তম বেসরকারী মালিকানাধীন সংস্থাগুলির মধ্যে একটি।
রতন টাটার প্রথম চাকরি
এবার আসা যাক রতন টাটার কথায়। TATA Group-এর চেয়ারম্যান হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার আগে রতন টাটা কী কাজ করতেন তা শুনলে আপনিও চমকে উঠবেন বৈকি। তিনি পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে টাটা স্টিল কোম্পানিতে সাধারণ কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করেন। এরপে কঠোর পরিশ্রমের পর টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি (টেলকো)-তে কাজ শুরু করেন রতন। ছ’মাস সেখানে প্রশিক্ষণ নেন।
গৌতম আদানির প্রথম চাকরি
এরপরের ব্যক্তির নাম হল আদানি গ্রূপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি, যাকে নিয়ে আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা হবে। অনেকেই হয়তো জানেন না যে গৌতম আদানি কেরিয়ারের প্রথম দিকে মহেন্দ্র ব্রাদার্স নামের একটি দোকানে হিরে ছাটাইয়ের কাজ করতেন। এরপর দুই থেকে তিন বছর সেখানে কাজ করার পর মুম্বইয়ে নিজের হিরের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ব্যস আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
সুধা মূর্তির প্রথম চাকরি
এরপরে যাকে নিয়ে আলোচনা হবে তিনি সকলের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি হলেন সুধা মূর্তি। ইনফোসিসের শীর্ষস্থানীয় মহিলা, লেখক এবং সমাজসেবী সুধা মূর্তি ভারতের বৃহত্তম অটো প্রস্তুতকারক টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেলকোতে নিযুক্ত প্রথম মহিলা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি দেশের বিভিন্ন অফিসে ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বদা প্রগতিশীল মতাদর্শের একজন মহিলা। ১৯৯৬ সালে ইনফোসিস শুরু করার আগে তিনি আরও কয়েকটি জায়গায় কাজ করেছিলেন। টেলকো সংস্থার তৎকালীন অধিকর্তাকে একটি পোস্টকার্ড পাঠিয়েছিলেন সুধা। সংস্থায় মহিলা কর্মীদের প্রতি আচরণ পছন্দ ছিল না সুধার বলে। এরপর সেই কোম্পানিতেই চাকরি পান তিনি।
কিরণ মজুমদার শয়ের প্রথম চাকরি
এবার আসা যাক কিরণ মজুমদার শয়ের কথায়। ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার ব্যালারেট ব্রিউং স্কুল থেকে মাস্টার ব্রিউয়ার ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি সেখানে শিক্ষানবিশ ব্রিউয়ার হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেন। তিনি ভারতীয় ব্রিউং সেক্টরে লিঙ্গ পক্ষপাতের মুখোমুখি হয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। জানলে অবাক হবেন, হাতখরচের জন্য কফিশপে কাজ করতে শুরু করেন কিরণ। সেইসঙ্গে কফি কী ভাবে তৈরি করতে হয় তার প্রশিক্ষণও নেন। যাইহোক বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকার মালিক তিনি।
ইন্দ্র নুয়ির প্রথম চাকরি
কথায় আছে, যে নারী রাঁধে সে চুলও বাঁধে। সেটা ইন্দ্র নুয়ি প্রমাণ করে দিয়েছেন। তিনি Pepsico সংস্থার কর্ত্রী। জানলে অবাক হবেন, ১৮ বছর বয়সে একটি কারখানায় প্রথম কাজ শুরু করেছিলেন ইন্দ্র নুয়ি।
আরও পড়ুন: বড় ঝটকা! মমতার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যা হল, কাঁপছে তৃণমূল
Godrej কোম্পানির নাম দেশজুড়ে বিখ্যাত। গোদরেজ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আরদেশির গোদরেজ ওষুধের দোকানের কর্মী হিসাবে রোজগার শুরু করেছিলেন। এরপর অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করবেন ভাবেন। কিন্তু যেমন ভেবেছিলেন তেমন সাফল্য মেলেনি। এরপর তালার ব্যবসার দিকে মন দেন তিনি। ব্যস আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।