সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: খালি জায়গা পড়ে রয়েছে? ভাবছেন কি চাষ করবেন, কিন্তু ভেবে পাচ্ছেন না? তাহলে আজকের প্রতিবেদনটি পড়ুন। হ্যাঁ, কারণ আধুনিক চাষের জগতে এবার উঠে এসেছে সিঁদুরের চাষ (Sindoor Farming)। অবাক লাগলেও সত্যি। আসলে আমরা যেটাকে সিঁদুর বলে চিনি, সেই গাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে দেশের বহু কৃষক।
একদিকে যেমন ধান গম চাষের খরচ দিনের পর দিন বাড়ছে, আর লাভের পরিমাণ কমছে, তখন কিছু কৃষক বিকল্প রাস্তা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সিঁদুরের চাষকে, যা কিনা কম খরচে দীর্ঘমেয়াদী আয় দেয়। কিন্তু কীভাবেই বা করবেন এই সিঁদুরের চাষ? জানতে হলে প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সিঁদুর গাছ আসলে কী?
আসলে এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Bixa orellana। কিন্তু সাধারণ মানুষ একে কুমকুম গাছ, ভেরমিলিয়ন ট্রি, কিংবা অ্যানাটো প্ল্যান্ট নামেই চেনে। আর এই গাছটি যখন ফল দেয়, তখন সেই ফলের ভিতরে থাকে লাল ও কমলা রঙের একরকম রং, যার নাম অ্যানাটো। আসলে এই রংটি কসমেটিক, খাদ্যদ্রব্য বা আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির কাজে লাগে। আর এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক এবং গোটা বিশ্বজুড়ে এর চাহিদা দিনের পর দিন হু হু করে বাড়ছে।
কেন এই চাষে কৃষকরা ঝুঁকছেন?
আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে এখন কৃষকরা কেমিক্যাল ফ্রি এবং অর্গানিক চাষের দিকে পা বাড়াচ্ছেন। আর সেই সূত্র ধরে অ্যানাটো গাছ এই তালিকার প্রথম সারিতে উঠে আসছে। কসমেটিক্স থেকে শুরু করে আয়ুর্বেদ এবং খাদ্যশিল্প, সব ক্ষেত্রেই এই রং ব্যবহার করা হয়। ফলে সিঁদুরের গাছ এখন আর শুধুমাত্র মন্দির বা পূজোর কাজে ব্যবহার হচ্ছে না, বরং দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লাভজনক বাণিজ্যিক ফসল হিসেবেও উঠে আসছে।
কত লাভ হতে পারে?
বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, সিঁদুরের গাছ একবার রোপন করলে তা 15 থেকে 20 বছর পর্যন্ত ফল দেয়। আর 1 একর জমিতে প্রায় 400 থেকে 500 টি গাছ লাগানো যায়। এমনকি প্রতিটি গাছ থেকে বছরে প্রায় 900 টাকা আয় হতে পারে। আর যদি 500 গাছ লাগাতে পারেন, তাহলে বছরে 4 লক্ষ টাকা হামেশাই আয় হবে।
বেশ কয়েকটি সুত্র খতিয়ে জানা গেল, প্রতিটি গাছ লাগাতে খরচ হয় মাত্র 30 থেকে 50 টাকা। আর এই গাছ চাষে দরকার পড়ে না বিশেষ যত্ন নেওয়ার এবং কীটনাশকের দরকার তো পড়েই না। ফলে খরচ নেই বললেই চলে এবং লাভের অংক প্রচুর।
কোথায় বিক্রি করবেন এই ফসল?
সারা দেশে কসমেটিক কোম্পানি, আয়ুর্বেদ ব্র্যান্ড, ফুড প্রসেসিং ইউনিট, এমনকি এক্সপোর্টাররা এখন এই সিঁদুরের ফসল কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এমনকি অনেক কৃষক সরাসরি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত থাকে। আর এতে পকেটে মোটা অংকের লাভ ঢোকে।
আরও পড়ুনঃ ট্রায়াল সম্পূর্ণ হলেও গড়াচ্ছে না ট্রেনের চাকা! কৃষ্ণনগর-আমঘাটা রেল প্রকল্পে হঠাৎ কী হল?
পাওয়া যায় সরকারের সাহায্য
বিভিন্ন রাজ্যের কৃষি দপ্তর এবং হর্টিকালচার মিশন সিঁদুরের চাষে আগ্রহী হয়ে কৃষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং অনুদানও দিয়ে থাকছে। তাই যদি আপনি এই চাষ শুরু করতে চান, তাহলে অবশ্যই নিজের জেলার কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। অনেক সময় বিনা খরচায় অর্থ সাহায্য মেলে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |