সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আমেরিকার সঙ্গে চুক্তির (India US Deal) ক্ষেত্রে এবার সতর্ক হলে ভারত! আমেরিকা এবং জাপানের মধ্যেই তৈরি হওয়া জটিলতার জন্যই কি এই সতর্কতা? নাকি ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের চুক্তিগুলি পুরোপুরি কার্যকর না হওয়া? নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে? চলুন খোলসা করা যাক আজকের প্রতিবেদনে।
জাপান এবং আমেরিকার মধ্যে দ্বন্দ্ব কোথায়?
জানিয়ে রাখি, জাপান এবং আমেরিকার মধ্যে একটি 550 বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছে যে, এই চুক্তির সম্পূর্ণ বিনিয়োগের ভার জাপান বহন করবে এবং 90% মুনাফা আমেরিকার হাতেই যাবে।
তবে জাপান জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত চুক্তি হয়নি তাঁদের মধ্যে। বিনিয়োগ অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যেই লাভের ভাগ সমান অনুপাতে হওয়া উচিত। অর্থাৎ, যে যত বিনিয়োগ করবে, সে লাভের অংক ততটাই পকেটে ঢোকাবে। আর এতেই ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়েছে।
তাহলে ভারতের উদ্বিগ্নতা কোথায়?
ভারতের বাণিজ্য এবং শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি জানিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা অগ্রসর পর্যায় রয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে কোনোরকম চুক্তি নয়। এমনকি আগস্ট মাসের দ্বিতীয়ার্ধে একটি মার্কিন প্রতিনিধি দল ভারতে আসবে এই আলোচনাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনাম কী বলছে?
অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের তরফ থেকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে আলোচনার পর একটি একতরফা চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে তা এখনো পর্যন্ত স্বাক্ষরিত হয়নি। উল্লুখ্য, গত 22 জুলাই ইন্দোনেশিয়ার প্রধান আলোচক এবং অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হার্টার্তো একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে।
কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করছে যে, এই চুক্তির যদি কোনো আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে তা ভবিষ্যতে নীতিগত ব্যর্থতার ঝুঁকিতে পড়বে। অন্যদিকে উচ্চ শুল্কের যে হার ঘোষণা করেছিল, তাতে ভিয়েতনাম এখনো স্বীকৃতি জানায়নি। কারণ, ভিয়েতনাম আশঙ্কা করছে যে, এই শুল্ক চালু হলে তাদের আমেরিকায় রপ্তানি এক তৃতীয়াংশ কমে যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ‘কীভাবে হাইকোর্ট এমন স্থগিতাদেশ দিতে পারে!’ OBC মামলায় সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তিতে রাজ্য
উল্লেখ্য, সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরে ভিয়েতনাম আমেরিকায় প্রায় 120 বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছিল। সাম্প্রতি আরেক রিপোর্ট বলছে, 20% থেকে 40% শুল্ক কার্যকর হলে প্রায় 37 বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি ক্ষতি হতে পারে, যা ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে পোশাক, জুতো ইত্যাদি খাতে বিরাট প্রভাব ফেলবে।
ফলত জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতা থেকেই ভারত এখন কোনো চুক্তিতে সই করতে চাইছে না। কারণ আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশের সঙ্গে সব দিক না ভেবে চুক্তি করে নেওয়া, ঠিক সুবিধার হবে না বলেই মনে করছে কেন্দ্র সরকার। তাই প্রতিটি শর্ত খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |