বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা। কেন্দ্রবিন্দুতে ইরান-ইজরায়েলের রক্তক্ষয়ী সংঘাত (Iran-Israel War)। দুপক্ষের আক্রমণে ইতিমধ্যেই অকালে ঝরেছে অসংখ্য প্রাণ! দুই দেশই আত্মরক্ষার খাতিরে ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। তবে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের মাঝে ভারতের আকাশেও ঘনাচ্ছে কালো মেঘ! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেল আবিবের সাথে ইরানের সংঘাত যতই মহাযুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে, ততই বিপদ বাড়ছে ভারতের। কেন? জেনে নিন সবটা।
ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে ক্ষতি হবে ভারতের?
মধ্যপ্রাচ্যে দুই দেশ যে হারে একে অপরের ওপর আঘাত হানছে তাতে, আগামী দিনে ভয়ঙ্কর কিছু হতে চলেছে তার পূর্বাভাস অনেক আগেই দিয়ে রেখেছেন বহু বুদ্ধিজীবী। এমতবস্থায়, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের সাথে তেল আবিবের সংঘর্ষ যত উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে ততই বিশ্ব অর্থনীতিতে চাপ বাড়ছে। আর সেই ধাক্কা এবার পেতে চলেছে ভারতও।
বহু বিশ্লেষকের দাবি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আগামী দিনে বিশ্ববাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। যার জেরে আকাশ ছোঁবে তেলের দাম। তাছাড়াও মুদ্রাস্ফীতির চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে GDP। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন, ইরান ইজরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত। কেননা, তেলের চাহিদার প্রায় 85 শতাংশ বিদেশ থেকেই পূরণ করে ভারত। ফলত, দুই দেশের যুদ্ধে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেল থেকে শুরু করে একাধিক পণ্য দ্রব্যের দাম গগনচুম্বি হবে।
তেলের অভাবে ভুগবে ভারত?
বহু বিশেষজ্ঞের মতে, ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে ভারতে তেলের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পাবে। কারণটা অবশ্য সকলেই জানেন। বর্তমানে তেলের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিদেশের ওপর নির্ভরশীল দিল্লি। ফলে, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সংঘর্ষ যতই ভয়ানক আকার নেবে ততই তেল অর্থাৎ পেট্রোল-ডিজেল, গ্যাস ও অন্যান্য একাধিক জিনিসের দাম আকাশ ছুঁতে পারে।
বলা বাহুল্য, ইতিমধ্যেই ইরান দাবি করেছে, তারা ইজরায়েলের দুটি তেলের খনিতে জোরালো হামলা চালিয়েছে। যে দৃশ্য ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। তাছাড়াও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে তেলের আকাল দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের থেকেও ভারতে তেলের দাম মাত্র ছাড়িয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে ইরাকের বিদেশমন্ত্রী সতর্ক করে জানিয়েছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে সমুদ্রপথ দিয়ে তেলের আমদানি না হওয়ায় ব্যারেল প্রতি 200 থেকে 300 ডলার বেড়ে যেতে পারে তেলের দাম। যার প্রভাব একেবারে খারাপ ভাবে পড়বে ভারতে!
বিমান ভাড়া থেকে শুরু করে রাসায়নিকের ওপর প্রভাব
বহু বিশেষজ্ঞের দাবি, ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধের কারণে যদি তেলের দাম বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে তেল কিনতে হবে বিমান সংস্থাগুলিকে। ফলত, অতিরিক্ত দাম দিয়ে জ্বালানি কিনতে হলে স্বাভাবিকভাবে বিমানের টিকিট মূল্য অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাছাড়াও রং উৎপাদনকারী কোম্পানি থেকে শুরু করে রাসায়নিক সার, গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ওষুধ ও পোশাকে ক্ষতিকারক প্রভাব
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা যত বাড়বে ভারতে ওষুধ থেকে শুরু করে পোশাক পণ্যের দাম ততই মাত্রা ছাড়াবে। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে ওষুধ আমদানি করে ভারত। কাজেই, সেখানে পরিস্থিতি জটিল হলে ওষুধ থেকে শুরু করে পোশাক পণ্য পাঠানো বন্ধ করে দেবে দেশগুলি। যার প্রভাভ একেবারে সরাসরি পড়বে ভারতীয় বাজারে।
অবশ্যই পড়ুন: G7-এর সদস্য নয়, কিন্তু তাও কেন বারবার ডাক পায় ভারত? জেনে নিন লুকিয়ে থাকা সত্য
ভারতীয় কোম্পানিগুলির ওপর প্রভাব
জানা যাচ্ছে, ভারতের একাধিক সংস্থা যেমন টাটার মালিকানাধীন TCS, উইপ্রো, আদানি গ্রুপ, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, সান ফার্মা ও ইনফোসিসের মতো একাধিক ভারতীয় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির অফিস রয়েছে ইজরায়েলে। কাজেই ইরানের সাথে তেল আবিবের সংঘর্ষ ক্রমশ জটিল পর্যায়ে পৌঁছলে ইজরায়েলে থাকা ভারতীয় কোম্পানিগুলির ব্যবসা যে লাটে উঠবে সে কথা বলাই যায়। তবে শোনা যাচ্ছে, ভারতের একাধিক কোম্পানি, তাদের ব্যবসা ভারতের স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |