পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ রাজ্যে একটা চাকরির খোঁজ বেরোলে তাতে আবেদন করার জন্য কয়েক হাজার প্রার্থী হাজির হয়ে যায়। তাই অনেকেই চাকরির আশা ছেড়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেছেন। আপনিও কি তেমনটাই ভাবছেন, তবে ঠিক কিসের ব্যবসা শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না? তাহলে আজকের প্রতিবেদনটি আপনারই জন্য। আজ তিনটি ব্যবসার (Business Idea) সম্পর্কে জানাবো যেগুলো কম পুঁজিতে শুরু করে ভালো টাকা আয় করা সম্ভব।
কম পুঁজিতে ইউনিক ব্যবসার আইডিয়া । Unique Business Idea with Low Investment
ব্যবসা করতে গেলে যে অনেক পুঁজি লাগে এটা অনেক ক্ষেত্রেই সত্যি নয়। কারণ এমন প্রচুর কাজ রয়েছে যেগুলো শুরু করতে খুবই কম টাকা লাগে। আর একবার চলতে শুরু করলে মাসে মাসে ভালো টাকা আয় সম্ভব। আজকের প্রতিবেদনে এমনই তিনটি ব্যবসার সম্পর্কে জানাবো আপনাদের।
খাবারের ব্যবসা | Food Business
ভারতবর্ষের যে কোনো কোণায় চলে যান না কেন, রাস্তার ধারে ঠিকই খাবারের দোকান দেখতে পাবেন। এটা এমন একটা ব্যবসা যেটা বাড়ি থেকে খুবই কম পুঁজিতে শুরু করা যায়। তবে যদি রাস্তার ধারে বা জনবহুল এলাকায় দোকান দেওয়া যায় তাহলে প্রথম থেকেই ভালো আয় সম্ভব।
কিভাবে খাবারের ব্যবসা শুরু করবেন?
আপনি যদি খাবারের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে প্রথমেই জনবহুল এলাকায় একটা দোকান খুঁজে নিতে হবে। এরপর মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় খবর যেমন, সকালের কচুরি কিংবা পরোটা, দুপুরের ভাত, ডাল, সবই আর রাতের দিকে রুটি, তড়কা ইত্যাদি দিয়ে শুরু করতে হবে। পরবর্তীতে মানুষের মধ্যে চাহিদা বাড়লে ধীরে ধীরে অন্য আইটেম যোগ করা যেতে পারে। শুরুর দিকে নিজে রান্না করাটাই ভালো। তাছাড়া ক্রেতার সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরী করতে পারলেই সে রোজ একই জায়গায় খাবার খেতে আসবে।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকল্পই হাতিয়ার, বাড়ি বসে কাজ করে ভালো আয় মহিলাদের
খাবারের ব্যবসায় কত টাকা আয় সম্ভব?
যদি অফলাইনে অর্থাৎ সঠিক জনবহুল জায়গায় খাবারের দোকান খোলা যায় তাহলে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা খুব সহজেই আয় করা যাবে। পরবর্তীতে যত লোকের চেনা জানা বাড়বে ব্যবসা আরও বড় হবে। সুতরাং খাবারের ব্যবসায় মাসে ২০,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা আয় হতেই পারে।
যোগা ট্রেনিং সেন্টার । Yoga Training Centre
বর্তমানে মানুষ আগের তুলনায় অনেকটাই স্বাস্থ্য সচেতন। তাই অনেকেই যোগ ব্যায়াম করেন নিয়মিত। আবার অনেকেই কোনো যোগা সেন্টারে যান। যোগ সেন্টারে সকলেই যেহেতু ব্যায়াম করতে আসে মোটিভেশন যাওয়া যায়। তাছাড়া সেখানে ট্রেনার থাকার ফলে কিভাবে ও কোনটার পর কোন ব্যায়াম করতে হবে সেটাও সঠিকভাবে জানা যায়।
কীভাবে যোগা ট্রেনিং সেন্টার শুরু করবেন?
আপনার বাড়িতে যদি জায়গা থাকে বা একটি বড় ঘর থাকে তাহলেই যোগ সেন্টার চালু করে দিতে পারেন। অনেকে বাড়ির ছাদেও ট্রেনিং সেন্টার চালু করেন। আপনি নিজে যদি যোগ ব্যায়াম প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন তাহলে নিজেই এই কাজ করতে পারেন। আর যদি প্রশিক্ষণ না থাকে তাহলে কোনো একজন ইন্সট্রাক্টরকে নিয়োগ করে যোগা ট্রেনিং সেন্টার চালু করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ ১২৬৭ পদে নিয়োগ, গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ব্যাঙ্ক অফ বরোদায় চাকরির সুযোগ, সহজেই আবেদন
যোগা সেন্টার চালু করার আগে প্রথমে জায়গা তৈরী করে নিতে হবে। তারপর একটা ভালো নাম ঠিক করে প্রচার শুরু করতে হবে। এতে যারা শিখতে আগ্রহী তারা যোগাযোগ করে ভর্তি হতে শুরু করবে।
যোগা ট্রেনিং সেন্টার থেকে কত টাকা আয় হতে পারে?
আপনার যোগা সেন্টারের লোকেশন, ট্রেনার থেকে শুরু করে সুযোগ সুবিধার উপর মাসিক ফি নির্ভর করে। কমপক্ষে মাসে ২০০ টাকা চার্জ করা হয় আর শুরুতে যদি ৫০ জন স্টুডেন্ট হয় তাহলেই মাসে ১০,০০০ টাকা আয় হবে প্রথম মাস থেকেই। এরপর সময়ের সাথে স্টুডেন্টের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এছাড়া অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে অনেক জায়গাতেই মাসে ৫০০ – ১০০০ টাকাও চার্জ করা হয়। সেক্ষেত্রে আয়ের পরিমাণ আরও অনেকটাই বেড়ে যাবে।
জামা কাপড়ের ব্যবসা । Garments Business
ভারতে যে কয়েকটি ব্যবসা সারাবছর চলতে পারে তার মধ্যে অন্যতম একটি হল জামা কাপড়ের ব্যবসা। একেবারে ছোট থেকেও এই কাজ শুরু করতে পারেন যে কেউ। বিশেষ করে কোনো উৎসবের আগে যদি ভালো স্টক তুলে জামা কাপড় বিক্রি করা যায় তাহলে বেশ ভালো আয় সম্ভব।
কিভাবে শুরু করবেন জামা কাপড়ের ব্যবসা?
আপনি নিজের বাড়ি থেকেই জামা কাপড় বা শাড়ির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এর জন্য কলকাতার বড় বাজার থেকে পাইকারি দামে মাল তুলে আনতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন হাট যেমন মঙ্গলা হাট, শান্তিপুর হাট ইত্যাদি থেকেও খুবই কম দামে পাইকারিতে শাড়ি, ব্লাউজ নাইটি নিতে পারেন। এরপর সেগুলিকে বাড়িতে বা দোকানে ভালোভাবে প্যাকেজিং করে বিক্রি করতে পারলেই হবে।
জামাকাপড় বা শাড়ির ব্যবসায় কত টাকা আয় সম্ভব?
এই ব্যবসার সবচেয়ে ভালো দিক হল যেহেতু নির্দিষ্ট করে কোনো দাম লেখা থাকে না তাই আপনি নিজের ইচ্ছা মত লাভ করতেই পারেন। উদাহরণস্বরূপ শান্তিপুর থেকে ৮০-৯০ টাকায় ঘরোয়া পড়ার মত শাড়ি কিনতে পারেন। যেগুলো ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। এছাড়া পাইকারি দামে ৩০০ – ৩৫০ টাকায় জিন্সের প্যান্ট ও ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় প্রিন্টেড টিশার্ট কিনতে পারেন। যেগুলি প্রায় ডাবল দামে বিক্রি করা সম্ভব। যদি সঠিকভাবে এই ব্যবসা করা যায় তাহলে মাসে ২০,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।