প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিপুল তোড়জোড় এবং বহু অপেক্ষার অবসানের পর অবশেষে গতকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে নিউটাউনে শুরু হয়েছে ২ দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (Bengal Business Summit)। প্রথম দিনেই যেন শিল্পপতিদের চাঁদের হাট বসেছিল। এই অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে সজ্জন জিন্দালের মতো দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা উপস্থিত ছিলেন। মোট ৪০ টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রথম দিন সেই সম্মেলন যেন জমে উঠেছিল। আর সেই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ধনকুবের মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani)। ২০১৬ সাল থেকেই তিনি এই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রতিবছর যোগ দেন।
মমতাকে লাকি চার্ম হিসেবে মানেন মুকেশ আম্বানি
এদিন অষ্টম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এসে পশ্চিমবঙ্গে বাণিজ্য পরিস্থিতির ভূয়সী প্রশংসা করলেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিসের প্রধান কর্ণধার মুকেশ আম্বানি। জানা গিয়েছে মোট পাঁচটি আলাদা বিষয়ে বিনিয়োগের কথাও ঘোষণা করেন তিনি। যার ওপর নজর ছিল সকলের। প্রথমেই তিনি তাঁর ঘোষণার মাধ্যমে জানিয়ে দেন যে, এ রাজ্যে মোট ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছিল রিলায়েন্স, এবার সেই বিনিয়োগের সংখ্যা বাড়তে চলেছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা করা হবে। প্রসঙ্গ ওঠে Jio পরিষেবা নিয়েও। সেক্ষেত্রে এদিন Jio-র জনপ্রিয়তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লাকি চার্ম হিসেবে বলে বসেন মুকেশ আম্বানি। তিনি জানান, Jio যাত্রা শুরু করেছিল কলকাতা থেকে। কলকাতা ও মমতা ব্যানার্জি সৌভাগ্য বয়ে এনেছে Jio- জনপ্রিয়তার। সেই কারণে এ রাজ্যে ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরির বিষয়ে আরও বিনিয়োগ করতে চাইছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিস।
গ্রিন এনার্জিতেও বিনিয়োগ মুকেশের
এদিন, রিটেল বা খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্রেও বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুকেশ আম্বানি। বর্তমানে রাজ্যে রিটেল ব্যবসার স্টোর রয়েছে মোট ১ হাজার ৩০০টি, এবার সেই সংখ্যাটি বাড়িয়ে করা হবে ১,৭০০। এ ছাড়াও, এ রাজ্যের একাধিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্রস্তুতকারক সংস্থাতেও বিনিয়োগ করেছে রিলায়েন্স। আনমোল রাজা, বিস্কফার্ম থেকে শুরু করে বিশ্ববাংলার মতো সংস্থার খাদ্য বিভাগে বিনিয়োগ করতে চলেছে আম্বানি সংস্থা। পাশাপাশি গ্রিন এনার্জিতে বিনিয়োগেরও কাজ করতে চলেছে রিলায়েন্স। সৌর বিদ্যুতের প্রকল্পের আরও বিকাশের জন্য সোলার বাংলা প্রকল্পের কথাও ঘোষণা করেন তিনি। এ ছাড়াও, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হাতে কালীঘাট মন্দির পুনঃনির্মাণের কাজ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ দীঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা মমতার
এছাড়াও এদিন মুকেশ আম্বানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিটনেস নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন,’আমাদের মমতা দিদি-মমতা মানে বিজনেস, আর সেটা তাঁর হৃদয়ের অন্তর থেকে। তিনি প্রায় ১৪ বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন। মানে তাঁর পলিসি ও নেতৃত্বের কারণে বাংলা অনেক লাভবান হয়েছে। মমতা দিদি, আপনার নামের মানে সহানুভূতি এবং সমবেদনা। এমনকি তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যায়। মমতাদিদি আমাকে বলেছেন যে তিনি ৬৪০০০ পা হাঁটেন। আমরা ভেবেছিলাম যে প্রতি সপ্তাহে ৬৪০০০ পা কিন্তু উনি জানিয়েছিলেন যে, প্রতিদিন ৬৪০০০ পা। তার মানে বুঝুন তাঁর ঠিক কতটা এনার্জি রয়েছে।’