সাইকেলে করে খাবার বিক্রি করে আজ ১০০০০০০০০০ কোটির ব্যবসা! চেনেন সীতারামকে?

Published on:

Sita ram Diwan chand food stall has built Rs 100 crore business by selling chole bhature on a bicycle

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গরম গরম ছোলে ভাটুরের (Chole Bhature) স্বাদ ভোজন প্রিয় মানুষদের আর আলাদা করে বলার অবকাশ রাখেনা। ভারতের এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি দেশের অন্যান্য শহর গুলির তুলনায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় রাজধানী দিল্লিতে। বর্তমানে সেই সূত্র ধরে এখন বিভিন্ন শহরের আনাচে-কানাচে বিক্রি হওয়া ছোলে ভাটুরেতে দিল্লির স্বাদ আনার চেষ্টা করে চলেছেন বিক্রেতারা।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

তবে অনেকেই জানেন না, দিল্লির ছোলে ভাটুরের জনপ্রিয়তা একপ্রকার একার হাতে ধরে রেখেছে রাজধানীর পাহাড়গঞ্জের অন্যতম ফুড জায়ান্ট সীতা রাম দিওয়ান চাঁদ ফুটস্টলটি। দিল্লির বুকে ঘোরাফেরা করেন আর এই ফুডস্টলটিকে চেনেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই নগণ্য।

দিল্লির স্ট্রিট ফুডের কেন্দ্রস্থল বলা চলে এই খাদ্য প্রতিষ্ঠানটিকে। যেখানে নরম তুলতুলে এবং কড়া স্বাদের ভাটুরে ও ঝাল ঝাল ছোলে বিক্রি হয়। প্রতিদিন কম করে হাজার জন মানুষ এই খাদ্য প্রতিষ্ঠান থেকেই নিজেদের ব্রেকফাস্টসহ দিনের অন্যান্য সময়ে পেটের জ্বালা নিবারণ করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক দিল্লির জনপ্রিয় ছোলে ভাটুরের দোকান সীতারাম দেওয়ান চাঁদের ফুলে ফেঁপে ওঠার গল্প।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

সীতা রাম দিওয়ান চাঁদের বেড়ে ওঠার কাহিনী

গল্পটা, দেশভাগ পরবর্তী সময়ের। হ্যাঁ, 1955 সালের কোনও এক দিনে লাহোর থেকে দিল্লিতে আসা মাত্র 15 বছর বয়সী এক শরণার্থীর হাত ধরেই গড়ে ওঠে বর্তমানে দিল্লির সবচেয়ে জনপ্রিয় ছোলে ভাটুরের দোকান সীতারাম দিওয়ান চাঁদ। জানা যায়, 1955 সালে শ্রী সীতা রাম জি এবং শ্রী দিওয়ান চাঁদ জির যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠে এই জনপ্রিয় খাদ্য প্রতিষ্ঠানটি।

তবে বর্তমানের এই ফুড স্টলের যাত্রাটা শুরু হয়েছিল সাইকেলে। হ্যাঁ, দিল্লির পাহাড়গঞ্জ ডিএভি স্কুলের সামনে সাইকেলে করে পড়ুয়াদের জন্য একেবারে নামমাত্র মূল্যে গরম গরম ছোলে ভাটুরে পরিবেশন করতেন তাঁরা। এভাবেই দীর্ঘ 15 বছর কেটেছিল দুজনের। সাইকেলে করে লোভনীয় খাবার বিক্রির মাঝে বহু চড়াই-উতরাই এসেছে। তবে শেষ হবে থেমে থাকেননি দুই বন্ধু।

ধৈর্যের হাল শক্ত রেখে শেষ পর্যন্ত 1970-এর দশকে সীতারাম একাই পাহাড়গঞ্জের ইম্পেরিয়াল সিনেমার বিপরীতে একটি ছোট ফুড স্টল চালু করেন। এরপর থেকে সেখানেই হাতের জাদু কাজে লাগিয়ে সুস্বাদ ছোলে ভাটুরে বিক্রি করতে শুরু করেন সীতারাম। সীতারামের ফুডস্টলটি প্রেক্ষাগৃহের বিপরীতে হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সেখানে ভিড় জমাতেন মেহবুব খান থেকে শুরু করে বিমল রায়ের মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালকরা।

আর সেই সূত্র ধরেই ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে থাকে সীতারামের দোকানে। বর্তমানে রেসিপি এক রেখে বংশ পরম্পরায় চলে আসছে সেই ফুটস্টল। যদিও এখন তার চাকচিক্য অনেকটাই বেড়েছে। ক্রেতাদের সংখ্যাও বেড়েছে বহুগুণ। সীতারাম বেঁচে না থাকলেও তার উত্তরসুরীরা এই ফুডস্টল থেকেই নিজেদের সুখের জীবন কাটাচ্ছেন।

সীতারামের সাফল্যের রেসিপি | Sita Ram Diwan Chand Success Story |

সীতারামের ফুড স্টলটি আজও রমরমিয়ে ব্যবসা করছে যে কারণে তা হলো তাদের নিজেদের খাবারের গুণমান ও দোকানের প্রতি ক্রেতাদের পূর্ণ আস্থা। বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, দিল্লির এই জনপ্রিয় খাদ্য প্রতিষ্ঠানটিতে খাবার তৈরি সময় সমস্ত রকমের নামি ব্র্যান্ডেড খাদ্য সামগ্রী ব্যবহার করা হয়।

একই সাথে, ছোলে তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মশলা কর্মচারী দিয়ে বাড়িতেই পেশাই করে তৈরি করা হয়। যার কারণে খাবারের স্বাদ ও গুণমান দুই ঠিক থাকে। জানা গিয়েছে, কুটির পনির, হিং, মেথিসহ 20টি মশলার সংমিশ্রণে তৈরি হয় ছোলে। পাশাপাশি, এই প্রতিষ্ঠানটি আজও শুকনো ডালিমের বীজ দিয়ে ক্রেতাদের টক মিষ্টি চাটনি পরিবেশন করে আসছে। যা এদের খাবারের মূল ইউএসপি।

অবশ্যই পড়ুন: এবার ডবল গতিতে ছুটবে লোকাল ট্রেন, শিয়ালদা লাইনে ঐতিহাসিক সাফল্য পেল পূর্ব রেল

প্রসঙ্গত, বংশপরম্পরায় চলে আসছে সীতারাম দিওয়ান চাঁদ ফুড স্টলের ব্যবসা। শেষ বারের মতো 2008 সালে ব্যবসার দায়িত্ব কাঁধে নেন তৃতীয় প্রজন্মের মালিক রাজীব কোহলি এবং উৎসব কোহলি। তাঁরাই বর্তমানে তাদের এই ফুড ব্র্যান্ডটিকে ক্রমশ ডিজিটাল প্লাটফর্ম গুলিতে অন্তর্ভুক্তির কাজ শুরু করেছেন। বেশ কিছু রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলির সাথে টায়আপ করে হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা রেখেছে রাজধানীর এই জনপ্রিয় ফুড জায়ান্ট।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group