পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ আজকাল শহরের পাশাপাশি গ্রাম থেকেও একাধিক ব্যবসা শুরু হচ্ছে। বিশেষ করে প্রথাগত চাষের বদলে বিভিন্ন বিদেশী ফুল, ফলের চাষ করে মোটা টাকা রোজগার করছেন অনেকেই। এমনই একটি ফল হল ড্রাগন ফল, যেটা চাষ করে মাসে লক্ষাধিক থাকা থেকে শুরু করে বছরে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করছেন অনেকেই।
উত্তর প্রদেশের অংশুল মিশ্র নামের এক যুবক বছরে ২০ লক্ষ টাকা আয় করছেন ড্রাগন ফল চাষ করে। আবার মহারাষ্ট্রের মহেশ আশবে নামের এক ২৭ বছরের যুবক ২০ একর জমিতে চাষ করে প্রতি বছর ২ কোটি টাকা আয় করছেন। আজকের প্রতিবেদনে এমনই কিছু চাষিদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কিছু টিপস রইল যা আপনাকেও ড্রাগন ফল চাষের জন্য সাহায্য করবে।
একবার ইনভেস্ট করলেই লম্বা আয়ের সুযোগ
ড্রাগন ফ্রুটের গাছ বসানোর জন্য একবারই খরচ করতে হয়। কেন? কারণ একবার ভালো করে বসানো হওয়ার পর গাছ বাড়তে শুরু করলেই আগামী ৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত সেটা ফল দিতে সক্ষম। তাই ৩-৪ লক্ষ টাকা দিয়ে একবার বিনিয়োগ করাটাই যথেষ্ট প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করার জন্য।
চাষের সম্পর্কে ভালো করে জেনেই শুরু করুন
আজও অনেকে জানেই না ড্রাগন ফ্রুইট ঠিক কি জিনিস! তাই সেটার চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে যে ধারণা থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক। তাই চাষের পূর্বে সবার আগে এই গাছ ও তার ফল সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়াটা প্রয়োজন। তাছাড়া এই ফলের সম্পর্কে মানুষকেও সচেতন করতে হবে। তাহলে মানুষ আরও বেশি করে কিনবেন ও বিক্রি বাড়বে।
এক্ষেত্রে আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে সেটা হল, শুরুতে ধৈর্য্য ধরে সঠিক নিয়মে চাষ করতে হবে। অনেক সময় ফলন আসতে দেরি হতে পারে বা টাকা ফেরত আসতে সময় লাগতে পারে। ফলে অনেকেই মনে করেন এটা প্রফিটেবল ব্যবসা নয়। তবে তেমনটা ভাবলে চলবে না। একবার বাজার ধরতে পারলেই ড্রাগন ফ্রুইটার ব্যবসায় লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব।
পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যেতে হবে
পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভাবে ড্রাগন ফলের চাষ হয়। তাছাড়া জায়গা ভেদে মাটির প্রকৃতি থেকে জলবায়ু সবটাই পাল্টে যায়। সেই কারণে আপনি যদি ড্রাগন ফ্রুটের ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনাকেও নানাভাবে সেটার রোপণ থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। এমনকি আপনি চাইলে হাইড্রাইপনিক্স বা মাটি ছাড়া চাষের পদ্ধতিও ব্যবহার করতেই পারেন।
নিজের সার নিজেকেই বানাতে হবে
নিজের হাতে ড্রাগন ফ্রুটের জন্য সার তৈরী করতে শিখতে হবে। এতে করে কিছুটা টাকা যেমন বাঁচানো যাবে তেমনি সঠিক পরিমাণে সারও দেওয়া হবে। কেরালার এক মহিলা চাষির মতে, তিনি নিজেই মাছ, চিংড়ি ও কাঁকড়ার খোল ও সমপরিমাণ জ্যাগারি মিশিয়ে সার তৈরী করতেন। এরশাদ পেঁপের খোসা দিয়ে ঢাকা দিয়ে একটা ছাউনি দেওয়া জায়গাতে রেখে দিতেন। ৩ মাস পর সেটাই চাষের জন্য মাটিতে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের যোগান দিত।
মাটিতে জল সেচ
ফলনের জন্য মাটিতে পুষ্টি পদার্থের পাশাপাশি জলেরও প্রয়োজন হবে। তাই কখন আর কিভাবে ড্রাগন ফল চাষের ক্ষেত্রে জল দিতে হবে আর কতটা দিতে হবে সেটা আগে থেকেই ভালো করে জেনে নিতে হবে। সব ঠিক থাকলে ড্রাগন ফলের গাছ বছরে ৩ বার ফলন দিতে সক্ষম।
গ্রিন হাউস চাষ পদ্ধতি
ড্রাগন ফ্রুট চাষ করার জন্য একটা নির্দিষ্ট আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়। তাই এক্ষেত্রে গ্রিন হাউস চাষ বা পলি হাউস চাষ করা যেতে পারে। যা ফলে একেবারে আদর্শ আবহাওয়া তৈরী করা যাবে ড্রাগন ফল চাষের জন্য।
আপনি যদি এই পদ্ধতিগুলি মেনে বৈজ্ঞানিক ভাবে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন তাহলে এক বছরের মধ্যেই বিনিয়োগের টাকা সমস্তটা ফেরত হয়ে যাবে। তারপর শুধুই লাভ। তাই ফাঁকা জায়গা থাকলে চাকরির আশায় না থেকে শুরু করুন এই ব্যবসা আর প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় শুরু করুন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |